“ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন করা যাবে না!”-‘SIR’ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে নয়া মামলা তৃণমূলের

নির্বাচন কমিশনের ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন’ (SIR) বা ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া নিয়ে এবার সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এই মামলাটি দায়ের করেছেন এবং বিহারের মতো ভোটমুখী রাজ্যে এই ধরনের ব্যাপক সংশোধন পদ্ধতি বাতিল করার আর্জি জানিয়েছেন।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। তৃণমূলের পক্ষ থেকে বর্ষীয়ান সাংসদ এবং আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সওয়াল করেন। তিনি আদালতে যুক্তি দেন যে, ২৪ মে নির্বাচন কমিশন যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত। যদিও এই মামলাটি পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সম্পর্কিত, আদালত এটিকে ‘SIR’ সংক্রান্ত মূল মামলার সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছে। এর ফলে, আজ, মঙ্গলবার মূল মামলার সঙ্গেই তৃণমূলের দায়ের করা মামলাটির শুনানি হবে।
আদালতের বাইরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, “নির্বাচন কমিশন জন্মের শংসাপত্র চাইছে, এটা সাধারণ মানুষ কোথায় পাবে? অনেকেরই তো জন্মের শংসাপত্র নেই। কমিশন ভোটার কার্ড বা আধার কার্ড গ্রহণ করছে না কেন?” তিনি অভিযোগ করেন যে, নির্বাচন কমিশন তাদের এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করছে এবং কে স্বদেশি বা বিদেশি, তা নির্ধারণ করার ক্ষমতা তাদের নেই।
এর আগে, ‘SIR’ সংক্রান্ত মূল মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট বিহারে ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম একলপ্তে বাদ দেওয়ার ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। এরপর কমিশন একটি হলফনামা দিয়ে জানায় যে, নতুন করে নাম তোলার আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে যদি নাম বাদ দিতে হয়, তবে আগে নোটিস দেওয়া হবে এবং ন্যায়বিচারের নীতি মেনে তাদের শুনানির পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া হবে। এখন দেখার বিষয়, এই বিষয়ে শীর্ষ আদালত কী রায় দেয়।
এদিকে, ‘SIR’ ইস্যুতে বিরোধীরা একজোট হওয়ায় কেন্দ্র সরকার কিছুটা চাপে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের দাবি, এনডিএ-র কিছু শরিক দলও এই বিষয়ে তাদের সঙ্গে একমত। তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, “নির্বাচন কমিশনের ‘SIR’-এর মাধ্যমে ভোট চুরির বিষয়টি যেভাবে বিরোধী শিবির তুলে ধরেছে, তা নিয়ে এনডিএ-র বেশ কয়েকজন সাংসদ একান্তে আমাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।” তিনি আরও বলেন, বিজেপি যেভাবে কমিশনকে ব্যবহার করে মহারাষ্ট্রে শরিক দলগুলোতে ভাঙন ধরিয়েছে, সেই ভয়ে তারা প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না।
এই মামলা এবং বিরোধীদের জোটবদ্ধ প্রতিবাদ ‘SIR’ প্রক্রিয়াকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।