স্বাধীনতার ৭৯ বছরে পা, তার আগে আরও একবার পিছু ঘুরে দেখা যাক কেমন ছিল সংগ্রামের সেই দিনগুলি

আগামী ১৫ই আগস্ট, ভারত তার ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করতে চলেছে। প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তির এই দিনটি প্রত্যেক ভারতীয়ের কাছে এক বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। স্বাধীনতার প্রাক্কালে ফিরে দেখা যাক সেই দিনগুলো, যা এই বিশাল সংগ্রামের পটভূমি তৈরি করেছিল।

ব্রিটিশদের ভারতে আধিপত্যের সূচনা হয় ১৭৫৭ সালের পলাশির যুদ্ধের পর, যখন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাকে পরাজিত করে বাংলা শাসনের ভার দখল করে। এরপর প্রায় দুই শতক ধরে ভারত সাম্রাজ্যবাদের শিকার হয়। ব্রিটিশরা ধীরে ধীরে বাংলা-সহ ভারতের বিভিন্ন অংশ নিজেদের দখলে নিয়ে আসে। কিন্তু এই শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম সংগঠিত প্রতিরোধ শুরু হয় ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের মাধ্যমে। যদিও এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়েছিল, তবু এটিকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই বিদ্রোহই ছিল সেই স্ফুলিঙ্গ, যা ধীরে ধীরে গণ-আন্দোলনের দাবানলে পরিণত হয়।

সিপাহী বিদ্রোহের পর লড়াইটি ধীরে ধীরে রাজনৈতিক সংগ্রামের রূপ নেয়। ১৮৮৫ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা হয়, যা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াইয়ের একটি মঞ্চ হিসেবে কাজ করে। এরপর ১৯০০ সালের পর থেকে ক্ষুদিরাম বসু, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মতো ব্যক্তিত্বদের নেতৃত্বে একের পর এক বিপ্লবী কর্মকাণ্ড সশস্ত্র আন্দোলনের জন্ম দেয়। ব্রিটিশ সরকার এই আন্দোলন দমনে নির্মম অত্যাচার চালায়।

পরবর্তীতে মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলনের মতো অহিংস গণ-আন্দোলন ব্রিটিশ শাসনের ভিত নাড়িয়ে দেয়। এই আন্দোলনগুলো ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নতুন মাত্রা যোগ করে এবং ব্রিটিশদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। এই সম্মিলিত সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগের ফলস্বরূপ, ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট মধ্যরাতে ভারত স্বাধীনতা লাভ করে। এই দিনটি সেই সকল বীর শহীদদের আত্মত্যাগ এবং অবিরাম সংগ্রামের স্মারক।