ভোটার লিস্টে নাম নেই বিধায়কের মা-বাবার! প্রশ্ন তুলে বিধায়ক পদ খারিজের দাবি তৃণমূলের, নথি দেখালেন অশোক

সংশোধিত ভোটার তালিকা (SIR) নিয়ে রাজ্যজুড়ে যখন জোর আলোচনা চলছে, তখনই বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়াকে ঘিরে বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে এসেছে। অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বিধায়কের নিজের নাম থাকলেও তার বাবা-মায়ের নাম নেই। এই বিষয়ে মহকুমা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে বিধায়কের পদ খারিজের দাবি তোলা হয়েছে। যদিও বিজেপি বিধায়ক এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন।
বনগাঁ মহকুমা শাসকের কাছে দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, বনগাঁ ব্লকের ঘাট বাউর অঞ্চলের ৩৫৪ নম্বর ভোটার তালিকায় বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়ার নাম থাকলেও তার বাবা-মায়ের ছবি বা নাম পাওয়া যায়নি। এরপর ২০১১ সালের ভোটার তালিকায় তাদের নাম দেখা যায়। মতুয়া মহাসংঘের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন যে, একজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে তিনি কীভাবে আইনসভার সদস্য হতে পারেন। এই অভিযোগে বনগাঁয় মতুয়া মহাসংঘের বনগাঁ শাখার সদস্যরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের বনগাঁ শাখার সম্পাদক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস বলেন, “২০০২ সালের ভোটার তালিকায় অশোক কীর্তনীয়ার নাম থাকলেও তার মা-বাবার নাম ছিল না। তিনি একজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হয়ে কীভাবে বিধায়ক হতে পারেন?” তিনি আরও বলেন, “আমরা অবিলম্বে তার পদত্যাগ এবং আইনানুগ ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি।”
অন্যদিকে, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া। তিনি বলেন, তার বাবা ১৯৫০ সালে বাংলাদেশ থেকে এসেছেন এবং ১৯৯৩ সালেই তাদের ভোটার তালিকায় নাম ওঠে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন ২০০২ সালের তালিকায় নাম ওঠেনি, তা সেই সময়ের বাম নেতৃত্বরা বলতে পারবে। তিনি এই অভিযোগকে তৃণমূলের তাকে বিরক্ত করার একটি পরিকল্পনা হিসেবে দেখছেন।
এই বিষয়ে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেছেন, “২০০২ সালে অশোক কীর্তনীয়ার নাম থাকলেও তার মা-বাবার নাম নেই কেন? এই প্রশ্নের উত্তর বিধায়ককে দিতে হবে। এমন ঘটনা প্রথম দেখলাম যে মা-বাবার আগে সন্তানের নাম ভোটার তালিকায় উঠেছে।” বিজেপি বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিকাশ ঘোষ অবশ্য এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “অশোক কীর্তনীয়ার বাবা ১৯৬০ থেকে ৬৫ সালের মধ্যে এদেশে এসেছেন এবং ১৯৯৩ সালেই তাদের নাম ভোটার কার্ডে ওঠে।”