নতুন আয়কর বিলে কোন কোন ক্ষেত্রে ট্যাক্সে ছাড়? TDS-ও দ্রুত, মিলবে যা যা সুবিধা…?

৬৩ বছরের পুরোনো আয়কর আইনকে প্রতিস্থাপন করে নতুন আয়কর বিল ২০২৫ (New Income Tax Bill 2025) অবশেষে সোমবার লোকসভায় পাস হয়েছে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন পেশ করা এই বিলে পুরনো আইনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিধান বহাল রাখার পাশাপাশি বেশ কিছু নতুন সংশোধনীও যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দুটি বিষয় হলো, টিডিএস (TDS) রিফান্ডের জন্য আইটিআর (ITR) দাখিলের সুবিধা অব্যাহত রাখা এবং ধর্মীয় ও দাতব্য ট্রাস্টে বেনামী দানের উপর কর ছাড় বহাল রাখা।

টিডিএস রিফান্ডের নিয়মে স্বস্তি:

নতুন আয়কর বিলে করদাতাদের জন্য একটি বড় স্বস্তির খবর এসেছে। প্রাথমিকভাবে, মূল বিলে বিধান ছিল যে টিডিএস রিফান্ড পেতে হলে করদাতাদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। কিন্তু, বিজেপি সাংসদ বৈজয়ন্ত পান্ডার নেতৃত্বাধীন ৩১ সদস্যের সিলেক্ট কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এই বিধান পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন নির্ধারিত সময়সীমার পরেও যারা আইটিআর দাখিল করেননি, তারাও টিডিএস রিফান্ডের জন্য দাবি জানাতে পারবেন। এই সিদ্ধান্ত সেইসব করদাতাদের জন্য বড় স্বস্তি, যারা নানা কারণে সময়মতো রিটার্ন দাখিল করতে পারেননি।

এছাড়াও, টিডিএস সংশোধনের বিবৃতি দাখিলের সময়কাল আয়কর আইন, ১৯৬১-এর ছয় বছর থেকে কমিয়ে দুই বছর করা হয়েছে। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস (CBDT) সূত্রে খবর, এর ফলে টিডিএস সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বেনামী দানে কর অব্যাহতি বহাল:

নতুন বিলে সিলেক্ট কমিটির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ মেনে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে, অলাভজনক সংস্থা (NPO) বা দাতব্য ট্রাস্টগুলিতে প্রদত্ত বেনামী অনুদানের উপর কর ছাড় অব্যাহত থাকবে। তবে, যে ধর্মীয় ট্রাস্টগুলি হাসপাতাল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো অন্যান্য কাজও পরিচালনা করে, তাদের প্রাপ্ত বেনামী অনুদানের উপর আইন অনুযায়ী কর প্রযোজ্য হবে।

অন্যান্য পরিবর্তনসমূহ:

পেশাদারদের জন্য সুবিধা: নতুন আয়কর (সংখ্যা ২) বিলের ১৮৭ ধারায় ‘পেশা’ শব্দটি যুক্ত করে সেইসব পেশাদারদের জন্য ইলেকট্রনিক পেমেন্ট পদ্ধতি গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যাদের বার্ষিক আয় ৫০ কোটি টাকার বেশি।

লোকসান ক্যারি ফরওয়ার্ড: আয়ের ক্ষতির ক্যারি ফরওয়ার্ড এবং সেট অফ সম্পর্কিত বিধানগুলিকে আরও সহজবোধ্য করার জন্য নতুন করে সাজানো হয়েছে।

এই নতুন আয়কর বিলটি ১৯৬১ সালের আইনকে প্রতিস্থাপন করবে এবং এতে সিলেক্ট কমিটির প্রায় সমস্ত সুপারিশই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই বিল পাস হওয়ায় কর ব্যবস্থা আরও সরল ও আধুনিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।