“সব কল্যাণ হ্যায় তো?”-কল্যাণ দেখা করতেই প্রশ্ন মোদীর, অপরদিকে SIR বিক্ষোভে ব্যস্ত মহুয়ারা

যখন রাজধানী দিল্লিতে ‘ভোট চুরি’ এবং SIR-এর প্রতিবাদে INDIA জোটের সাংসদরা পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তখন এক সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র ধরা পড়ল সংসদ চত্বরে। সোমবার নবনির্মিত সাংসদ আবাসনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশে দেখা গেল তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রতিবাদী রাজনীতির উত্তাপের মধ্যে এই সৌহার্দ্যপূর্ণ মুহূর্তটি রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

বিক্ষোভের আবহে সৌজন্যের ছবি

একদিকে যখন মহুয়া মৈত্র, ডেরেক ও’ব্রায়েন, সাগরিকা ঘোষ-এর মতো তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা দিল্লি পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন, তখন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কুশন বিনিময় করছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে হাসিমুখে কল্যাণের কাছে জানতে চান, ‘সব কল্যাণ হ্যায় তো?’ অর্থাৎ, সব ঠিকঠাক আছে তো? এই প্রশ্ন শুনে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিবাচক ভঙ্গিতে মাথা নেড়ে সম্মতি জানান।

ঘটনাটি ঘটে নবনির্মিত ১৮৪টি ফ্ল্যাটের সাংসদ আবাসনের উদ্বোধনে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অনুষ্ঠান শেষে মঞ্চে ছবি তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী সকলকে আহ্বান জানান। তিনি নিজেই মঞ্চে রাখা চেয়ারগুলি সরাতে শুরু করলে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এগিয়ে আসেন তাঁকে সাহায্য করার জন্য। এরপর তাঁরা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ছবিও তোলেন। এই দৃশ্য দ্রুত রাজনৈতিক মহলে ছড়িয়ে পড়ে এবং তীব্র বিতর্কের জন্ম দেয়।

কল্যাণের সাফাই: ‘দলনেত্রী সব জানেন’

প্রশ্ন উঠেছে, যখন দলের অন্যান্য সাংসদরা প্রতিবাদে শামিল, তখন কেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিক্ষোভে অংশ নিলেন না? এই প্রশ্নের জবাবে কল্যাণ জানিয়েছেন, SIR সম্পর্কিত সুপ্রিম কোর্টের একটি মামলার কাজে তিনি ব্যস্ত ছিলেন। তিনি আরও জানান, এই বিষয়টি সম্পর্কে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পূর্ণ অবহিত।

উল্লেখ্য, সাংসদের হাউস স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য হিসেবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই আবাসন নির্মাণের শেষ পর্যায়ের তত্ত্বাবধানে যুক্ত ছিলেন। আবাসনটির আসবাবপত্র এবং অন্দরসজ্জা দেখার দায়িত্বও তাঁর কাঁধেই ছিল। এটি সম্ভবত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর এই সৌজন্য বিনিময়ের একটি অন্যতম কারণ।

এই ঘটনা একদিকে যেমন রাজনৈতিক সৌজন্যের এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, অন্যদিকে তা বিরোধী জোটের ঐক্য এবং তৃণমূলের অবস্থান নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। যখন INDIA জোটের শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা চলছে, তখন এই ব্যক্তিগত সৌহার্দ্যের ছবি কি অন্য কোনো বার্তা দিচ্ছে, সেই জল্পনা এখন রাজনৈতিক মহলে তুঙ্গে।