OMG! হার্টে ক্যান্সার-টিউমার, বিরলতম অপারেশনে সাফল্য পেলো চিকিৎসকরা, সুস্থ যুবক

একটি বিরল এবং ক্যান্সারপ্রবণ টিউমার সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপসারণ করে নজির সৃষ্টি করেছে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল। বাঁকুড়ার কোতুলপুরের বাসিন্দা ৩৪ বছর বয়সী মানসকুমার খাঁ-এর হৃদপিণ্ডে অবস্থিত এই টিউমারটি অপসারণের জন্য দেশের একাধিক সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, এমনকি ভেলোরের মতো বিখ্যাত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানও ঝুঁকি নিতে রাজি হয়নি।
প্রায় এক বছর আগে মানস শ্বাসকষ্ট ও বুকে জল জমার সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। কলকাতার চিকিৎসকদের পরামর্শে তিনি ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিক্যাল কলেজে যান। সেখানেই জানা যায়, তার হৃদপিণ্ডে একটি বিরল ম্যালিগন্যান্ট (ক্যান্সারপ্রবণ) টিউমার রয়েছে। কিন্তু ঝুঁকির কারণে সেখানকার চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচারে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর চেন্নাই, হায়দ্রাবাদ, বেঙ্গালুরু এবং কলকাতার অন্যান্য হাসপাতালে ঘুরেও তিনি একই অভিজ্ঞতা পান।
অবশেষে দুই মাস আগে তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন এবং কার্ডিয়োথোরাসিক ভাস্কুলার সার্জারি (CTVS) বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক শান্তনু দত্তের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা শুরু হয়। শান্তনু দত্ত জানান, মানসের হৃদপিণ্ডে যে টিউমারটি হয়েছিল, তা হলো ‘প্লিওমর্ফিক সারকোমা’। সাধারণত, হৃদপিণ্ডে টিউমার খুব কমই দেখা যায়, এবং হলেও তা নিরীহ প্রকৃতির হয়ে থাকে। কিন্তু মানসের ক্ষেত্রে এটি ছিল ক্যান্সারপ্রবণ, যা এটিকে অত্যন্ত বিরল করে তোলে। এই ধরনের টিউমার অপসারণের অস্ত্রোপচার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, কিন্তু এসএসকেএমের চিকিৎসক দল দক্ষতার সঙ্গে কাজটি সম্পন্ন করেছে।
গত ১৬ জুলাই এই জটিল অস্ত্রোপচারটি সম্পন্ন হয়। ডা. শান্তনু দত্তের নেতৃত্বে টিমে ছিলেন চিকিৎসক শিল্পা বসুরায়, রন্মিতা পাল, দেবতনু হাজরা ও অপর্ণা বাসুমাতারি। অ্যানাস্থেসিয়ার দায়িত্বে ছিলেন ডা. চৈতালি সেন দাশগুপ্ত, কাকলি ঘোষ ও গিরিরাজ শর্মা। অস্ত্রোপচারের পর ২৪ জুলাই মানস হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।
গত মঙ্গলবার মানসকুমার খাঁ প্রথমবার চেক-আপের জন্য এসএসকেএম-এর সিটিভিএস বিভাগে এসেছিলেন। চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নিশ্চিত করেছেন যে তিনি এখন ভালো আছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, তাদের নিজেদের কর্মজীবনেও এমন বিরল টিউমার অপসারণের অভিজ্ঞতা খুবই বিরল। এই সাফল্য এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসা দক্ষতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করল।