নয়ডার একটি ডে-কেয়ার সেন্টারে মাত্র দেড় বছরের এক শিশু কন্যার উপর অকথ্য নির্যাতনের ঘটনা সামনে এসেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, এক পরিচারিকা শিশুটিকে বারবার চড় মারছে, মেঝেতে ইচ্ছে করে ফেলে দিচ্ছে এবং তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্নও পাওয়া গেছে। এই ঘটনা নয়ডার সেক্টর ১৩৭-এর ‘প্যারাস টিয়েরিয়া’ আবাসনে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

শিশুটি বাবা-মায়ের অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৪ আগস্ট তার উরুতে আঘাতের দাগ দেখে প্রথমে তারা ভেবেছিলেন অ্যালার্জি হয়েছে। কিন্তু পরে ডে-কেয়ারের অন্য শিক্ষকরা তাঁদের জানালে ডাক্তার পরীক্ষা করে নিশ্চিত করেন যে সেগুলি মানুষের দাঁতের কামড়ের চিহ্ন। এরপর বাবা-মা সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চাইলে এই ভয়ংকর দৃশ্যটি তাদের সামনে আসে। ফুটেজে দেখা যায়, অভিযুক্ত পরিচারিকা শিশুটিকে বারবার আঘাত করছে এবং শিশুটির কান্না স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে।

আক্রান্ত শিশুটির বাবা সন্দীপ জানিয়েছেন, ২১ মে থেকে তাঁরা তাঁদের মেয়েকে প্রতিদিন মাত্র দুই ঘণ্টার জন্য এই ডে-কেয়ারে পাঠাচ্ছিলেন। প্রতি দুই ঘণ্টার জন্য ২,৫০০ টাকা নেওয়া হতো। ডে-কেয়ারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তিনজন শিক্ষক শিশুর দেখাশোনা করবেন, কিন্তু বাস্তবে শিশুটি ওই পরিচারিকার তত্ত্বাবধানেই ছিল। সন্দীপ আরও দাবি করেন যে, আরও একটি পরিবার একই ধরনের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে, ডে-কেয়ারের মালিক এই ঘটনার সময় কোনো পদক্ষেপ নেননি, বরং অভিযুক্তের সঙ্গে মিলে নির্যাতিত শিশুর বাবা-মাকে হুমকি দিয়েছেন। সন্দীপ পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন, “ডে-কেয়ারের মালিক ও অভিযুক্ত পরিচারিকার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে আর কোনো শিশুকে এমন পরিস্থিতির শিকার হতে না হয়।”

পুলিশ জানিয়েছে, শিশুর মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং অভিযুক্ত পরিচারিকাকে আটক করা হয়েছে। পরিচারিকা নিজেও নাবালিকা। পুলিশ এই ঘটনায় ডে-কেয়ার সেন্টারের লাইসেন্স এবং কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনো অনিয়ম ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে। এই ঘটনা ডে-কেয়ার সেন্টারগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।