‘প্রকৃত বাঙালিদের ভোটাধিকার কাড়তে চাইছে’-EC-কে ‘বিজেপির হাতের পুতুল’ বললেন অভিষেক

নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ফের সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ঝাড়গ্রামে মুখ্যমন্ত্রী যে অভিযোগ তুলেছিলেন, বৃহস্পতিবার একই সুর শোনা গেল অভিষেকের কণ্ঠে। তাঁদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করছে, যা দেশের গণতন্ত্রের জন্য লজ্জাজনক।
ঝাড়গ্রামে এক সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি অভিযোগ করেন যে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন চলছে। তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন অমিত শাহের হাতের পুতুল। যে দিকে নাচাবেন, সে দিকেই নাচবে।” তিনি আরও দাবি করেন, ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়াতেও বিজেপি চক্রান্ত করছে।
দিল্লি যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একই অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করেন। তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করছে এবং বিজেপিকে বাড়তি সুযোগ করে দিচ্ছে।” অভিষেকের মতে, বিজেপি এর আগে সংবাদমাধ্যম ও বিচারব্যবস্থাকে নিজেদের কাজে লাগিয়েছিল, আর এখন নির্বাচন কমিশনকেও ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, প্রায় দেড় বছর ধরে বাংলার সরকারকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না, যা জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।
‘বাংলার মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে আছে’:
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, কমিশনের এই ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে বিজেপি লাভবান হওয়ার চেষ্টা করলেও তা সফল হবে না। তাঁর কথায়, “বাংলায় আগেও কমিশন বিজেপিকে সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, তাতে কোনো লাভ হয়নি, এবারও হবে না।” তিনি বলেন, বাংলার মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে আছেন এবং তাঁরা ভোট দিয়ে সেই প্রমাণ দেবেন।
অর্থনৈতিক বঞ্চনার অভিযোগ:
অভিষেক জল জীবন মিশনের মতো বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ আটকে রাখা নিয়েও বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, বিজেপি বাংলার মানুষের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে এবং সেই কাজে নির্বাচন কমিশন নির্লজ্জভাবে সহযোগিতা করছে। তাঁর মতে, কমিশনের ভূমিকা অত্যন্ত লজ্জাজনক। ১০০ দিনের কাজের টাকা সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ তৃণমূল এর আগেও করেছে, যা নিয়ে অভিষেক আবারও সরব হলেন।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের ফলে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে। আগামী নির্বাচনে এই বিষয়গুলি কতখানি প্রভাব ফেলে, তা দেখতে উৎসুক রাজনৈতিক মহল।