‘বাংলাদেশি ভাষা’ বিতর্ক: TMC-র সুরেই সুর বামের, দিল্লি পুলিশকে ‘অশিক্ষিত’ বললেন সেলিম

দিল্লি পুলিশের এক অফিসারের চিঠিতে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশিদের ভাষা’ হিসেবে উল্লেখ করার ঘটনায় ভারতের রাজনৈতিক মহলে ঝড় উঠেছে। তৃণমূল কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, নয়াদিল্লির লোধি কলোনি থানার অফিসার অমিত দত্ত পশ্চিমবঙ্গের বঙ্গভবনের ওসি-কে পাঠানো একটি চিঠিতে এই মন্তব্য করেছেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই মন্তব্যকে ‘শুধু অপমান নয়, বরং বাংলা ভাষার ভারতীয় পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টা’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূলের দাবি, বাংলা ভাষা বিশ্বব্যাপী প্রায় ২৫ কোটিরও বেশি মানুষের মাতৃভাষা এবং ভারতের সংবিধানের অষ্টম তফসিলে স্বীকৃত ২২টি সরকারি ভাষার মধ্যে অন্যতম। দলটির বক্তব্য, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষাকে কেবল একটি দেশের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া গভীর সংকীর্ণতার পরিচয়।
এই বিতর্কে যোগ দিয়েছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন, “‘বাংলাদেশী ভাষা’টা কী? সংবিধানের অষ্টম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত ভাষাগুলিও কি দিল্লি পুলিশ জানে না? ওই অফিসার কি নিরক্ষর, নাকি ওএমআর জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছেন?” সেলিম আরও অভিযোগ করেন, বর্তমান শাসকগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক রাষ্ট্রবাদের নামে দেশের বহুত্ববাদকে অস্বীকার করে একটি অভিন্ন সংস্কৃতি চাপিয়ে দিতে চাইছে, যা আরএসএস-এর আদর্শের প্রতিফলন।
অন্যদিকে, এই বিতর্কে ভিন্ন সুর তুলেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “বাংলাদেশি ও পশ্চিমবঙ্গের বাংলা আলাদা। বই পড়লেই বোঝা যায়।” তার মতে, শুধু বাংলা বললেই কেউ ভারতীয় হয়ে যায় না, কারণ অনেক অনুপ্রবেশকারী ভুয়া নথি ব্যবহার করে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রবেশ করছে।
এই ইস্যু নিয়ে তৃণমূল বা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি। তবে রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনা ভাষা এবং জাতীয়তাবাদ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে।