ভেলায় মৃতদেহ শ্মশানে, বানভাসি ঘাটালের মর্মান্তিক দৃশ্য ঘিরে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে

বর্ষার জলে বানভাসি ঘাটালের এক মর্মান্তিক ছবি সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে, যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তুমুল তরজা শুরু হয়েছে। রবিবার গভীর রাতে ঘাটাল পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রয়াত কাউন্সিলর কানহাইয়ালাল চৌধুরীর স্ত্রী মনসা চৌধুরীর মৃত্যু হয়। গ্রামের একপ্রান্তে শ্মশান, কিন্তু চারদিকে জল থাকায় মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার একমাত্র ভরসা ছিল কলার ভেলা। এই পুরো পথ ভেলায় চাপিয়েই মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়, যা দেখে এলাকার মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এই করুণ দৃশ্যকে ইস্যু করে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে সরাসরি আক্রমণ করেছেন বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট। তিনি বলেন, “ইলেক্ট্রিক চুল্লি তৈরির কাজ আজও সম্পূর্ণ হলো না। ঘাটাল পৌরসভায় কীসের উন্নয়ন হয়েছে? চেয়ারম্যান কী করেছেন? মাস্টার প্ল্যানের নাম করে কোটি কোটি টাকা লুঠ হচ্ছে।” শীতল কপাটের এই মন্তব্য শাসকদলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে।

তবে, মৃতদেহ কেন কলার ভেলায় ভাসিয়ে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হলো, তা নিয়ে পাল্টা যুক্তি খাড়া করেছেন ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অজিত মাইতি। তিনি বলেন, “আত্মীয়রা নৌকায় করে নিয়ে গিয়েছেন। সেখানে স্বাভাবিক রীতি অনুযায়ী কিংবা রেওয়াজ অনুযায়ী কলার ভেলাতে করে দেহ ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।” অজিত মাইতির এই ‘রেওয়াজ’ তত্ত্ব নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কারণ অধিকাংশ মানুষই এই ধরনের কোনো রেওয়াজের কথা জানেন না।

এমনিতেই জলযন্ত্রণায় দমবন্ধ অবস্থা ঘাটালবাসীদের। পান্না, ঘিসোরা সহ একাধিক পঞ্চায়েতের বেশ কিছু এলাকা এখনো জলে ডুবে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যোগাযোগের একমাত্র ভরসা সরকারি খেয়া বা বাড়িতে থাকা ডিঙি নৌকা। এমন এক সময়ে মৃতদেহ ভেলায় ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘাটালে জলবন্দী মানুষের দুর্দশা এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।