স্কুলে ঢুকে অকথ্য ভাষণ! চটে লাল রচনা, পদত্যাগ করলেন প্রাক্তন পুরপ্রধান গৌরীকান্ত

হুগলির চুঁচুড়ায় একটি স্মার্ট ক্লাসরুম নির্মাণকে ঘিরে তৃণমূলের সাংসদ ও বিধায়কের মধ্যে তীব্র সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাণীমন্দির গার্লস স্কুলের পরিচালন সমিতি থেকে পদত্যাগ করেছেন তৃণমূল কাউন্সিলর ও প্রাক্তন পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়, যা রাজনৈতিক মহলে নতুন করে জল্পনা সৃষ্টি করেছে।
বিতর্কের সূত্রপাত:
সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তহবিল থেকে চুঁচুড়ার বাণীমন্দির গার্লস স্কুলে স্মার্ট ক্লাসরুম নির্মাণের কাজ চলছিল। অভিযোগ উঠেছে, এই নির্মাণকাজ চলাকালীন বিধায়ক অসিত মজুমদার স্কুলে গিয়ে চেঁচামেচি করেন এবং শিক্ষিকাদের উদ্দেশে অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছান রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “শিক্ষিকাদের সঙ্গে এই ধরনের ব্যবহার কোনোভাবেই বরদাস্তযোগ্য নয়। আমি হতবাক।” তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে তিনি আরও স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরি করবেন এবং তাকে থামানোর সাহস যেন কেউ না দেখায়।
গৌরীকান্তের পদত্যাগ ও বিধায়কের পক্ষাবলম্বন:
তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়, যিনি নিজেও চুঁচুড়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান, এই বিতর্কের জেরে পরিচালন সমিতি থেকে পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগপত্রটি তিনি স্কুলের সভাপতি, হুগলি ডিআই এবং জেলা শাসককে পাঠিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, “বিধায়ক কোনোভাবেই স্কুলে অসদাচরণ করেননি। রাজনৈতিক স্বার্থে তাঁর নামে মিথ্যা অভিযোগ ছড়ানো হচ্ছে। বিবেকের তাড়নায় আমি পরিচালন সমিতি থেকে সরে দাঁড়ালাম।”
গৌরী মুখোপাধ্যায়ের মতে, বিধায়ক একজন অভিভাবকের অভিযোগের ভিত্তিতে স্কুলে গিয়েছিলেন। যেহেতু এটি একটি মেয়েদের স্কুল, তাই নির্মাণকাজে যুক্ত কর্মীদের পরিচয়পত্র আছে কিনা তা তিনি জানতে চেয়েছিলেন। এটি কোনো অশ্লীল ব্যবহার নয়, বরং নিরাপত্তার স্বার্থে একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির প্রশ্ন ছিল।
অসিত মজুমদারের প্রতিক্রিয়া:
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অসিত মজুমদার বলেন, “আমি দলের সাংসদকে নিয়ে কিছু বলতে চাই না। যা বলার দলকে বলব। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে থানায় জানানো হোক। আমি ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্য হিসেবে আমার দায়িত্ব পালন করছিলাম।”
এই ঘটনা তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সংঘাতকে আবারও প্রকাশ্যে এনেছে। সাংসদ ও বিধায়কের মধ্যে চলা এই টানাপোড়েন এবং প্রশাসনিক প্রকল্পের কাজ নিয়ে রাজনৈতিক তরজা এখন চুঁচুড়ার রাজনৈতিক মহলে আলোচনার প্রধান বিষয়। এখন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়, তার দিকেই সবার নজর।