বাড়ি তৈরি করলে দিতে হবে ‘তোলা’! বাড়ি এসে হুমকি তৃণমূল নেতার, ভয়ঙ্কর পরিণতি বৃদ্ধের

বাড়ি তৈরির জন্য এক লক্ষ টাকা ‘তোলা’ না দেওয়ায় তৃণমূল কর্মীর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে ব্যান্ডেলে। অভিযোগের তির স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য এবং তৃণমূল নেতা দীনেশ যাদবের দিকে। মৃতের পরিবারের দাবি, তোলা দিতে অস্বীকার করায় অভিযুক্ত দীনেশ যাদব দলবল নিয়ে তাঁদের বাড়িতে হামলা চালান এবং হুমকি দেন। যদিও দীনেশ যাদব তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ব্যান্ডেলের বাসিন্দা মহম্মদ ফকিরের পরিবারের অভিযোগ, বাড়ি তৈরির জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য দীনেশ যাদব ১ লক্ষ টাকা ‘তোলা’ দাবি করেন। গত ১২ জুলাই সন্ধ্যায় মহম্মদ ফকিরের পরিবার টাকা দিতে অস্বীকার করলে দীনেশ তাঁর দলবল নিয়ে মহম্মদ ফকিরের বাড়িতে চড়াও হন বলে অভিযোগ।
এই ঘটনার পর ৬০ বছর বয়সী মহম্মদ ফকির হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং তাঁকে চুঁচুড়ার ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ফকিরের ছেলে মহম্মদ আমান অভিযোগ করেন, এরপরেও দীনেশ তাঁদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেন এবং বৃহস্পতিবার রাতে নির্মীয়মান বাড়ির একাংশ ভেঙে দেন। দুঃখজনকভাবে, শুক্রবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মহম্মদ ফকিরের মৃত্যু হয়।
আমানের দাবি, তোলা দিতে না পারার কারণেই তাঁর বাবার এভাবে মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি চাই দীনেশকে দল থেকে বহিষ্কার করা হোক। পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নিক।”
অন্যদিকে, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা দীনেশ যাদব তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “১ লক্ষ কেন, এক টাকা চেয়েছি, কেউ প্রমাণ করতে পারবে না।” আমান যে তাঁকে ভোটে জেতাতে সাহায্য করেছিলেন, তা স্বীকার করে দীনেশ বলেন যে, আমান প্রতিবেশী এক শিক্ষিকার সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেছেন।
এদিকে, বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পেয়ে ব্যান্ডেলে যান হুগলি জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল নেতা নির্মাল্য চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “আমি নিজে দেখিনি কী হয়েছিল। তবে আইন সবার জন্য সমান।” স্থানীয় বিজেপি নেতা দেবব্রত বিশ্বাস এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, “পরিবার যা অভিযোগ করছে সেটা পুলিশ প্রশাসনের দেখা উচিত।” তবে, বৃদ্ধের মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।