“বাংলায় ‘প্রসেনজিৎ মডেল’, তৈরি হচ্ছে ১০০টা সিনেমা হল”-বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

মাল্টিপ্লেক্সের দাপটে যখন একের পর এক সিঙ্গল স্ক্রিন হল বন্ধ হচ্ছে, তখন বাংলা সিনেমার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন চিন্তিত চলচ্চিত্র মহল, ঠিক তখনই আশার আলো দেখালেন টলিউডের ‘ইন্ডাস্ট্রি’ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর এক অভিনব উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা শোনা গেল স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। বৃহস্পতিবার আলিপুরের ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে ‘মহানায়ক সম্মান’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রসেনজিতের এই ‘আইডিয়া’ নিয়ে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী, যা বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সিনেমা প্রদর্শনের নতুন দিগন্ত খুলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যে জানান, “প্রসেনজিৎ একটা ভাল আইডিয়া করেছে, একটা মডেল করেছে। অফিসাররা দেখে এসে আমায় জানিয়েছে। আমাদের ভাল লেগেছে মডেলটা।” এই ‘মডেল’ কী, তা বিশদে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রায় ১০০টা জায়গায় ৪০-৫০ জন বসার মতো একটা সিনেমা ঘর তৈরি করছে (প্রসেনজিৎ)। মডেলটা দেখে খুশি হয়েছি আমরা। এটা হলে বুথ স্তরে, তৃণমূল স্তরে, প্রত্যন্ত গ্রামে সিনেমাগুলি দেখতে পাবেন সকলে। সিনেমার চাহিদা বাড়বে ওরা যে সিনেমাগুলি তৈরি করে, তার মার্কেট পাবে। কর্মসংস্থান হবে।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সকলের জন্য এক নতুন সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে এসেছে। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের অবদান অনস্বীকার্য। বাণিজ্যিক ছবির পাশাপাশি ভিন্ন ধারার ছবিতেও তাঁর অভিনয় দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। সিনেমা যে তাঁর ধ্যান-জ্ঞান, তা বারবার প্রমাণিত হয়েছে তাঁর কর্মে। এমন পরিস্থিতিতে যখন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের যুগে সিনেমা হলের সংখ্যা ক্রমশ কমছে এবং বাংলা ছবি তার বাজার হারাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে, তখন প্রসেনজিতের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর ফলে শুধু যে প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ সিনেমা দেখার সুযোগ পাবেন তা নয়, বরং বাংলা ছবির নির্মাতারাও তাঁদের কাজের জন্য একটি বৃহত্তর বাজার খুঁজে পাবেন। একইসঙ্গে এর মাধ্যমে স্থানীয় স্তরে কর্মসংস্থান সৃষ্টির সম্ভাবনাও দেখছেন অনেকে।
যদিও এই ‘সিনেমা ঘর’ মডেল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিস্তারিত তথ্য দেননি, তবে প্রসেনজিতের উপস্থিতিতে তাঁর এই ঘোষণা চলচ্চিত্র মহলে নতুন জল্পনার সৃষ্টি করেছে। এই উদ্যোগ কিভাবে বাস্তবায়িত হবে, বা এর রূপরেখা কেমন হবে, তা জানতে উৎসুক সকলে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা নিঃসন্দেহে প্রসেনজিতের এই স্বপ্নের প্রকল্পে এক নতুন গতি এনে দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে।