পাচারের আগেই মালদা টাউন স্টেশনে উদ্ধার ২৬৮টি বিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপ, আটক নেই কেউ

বন্যপ্রাণী পাচারের একটি বড়সড় চেষ্টা ভেস্তে দিল মালদা টাউন জিআরপি থানার পুলিশ। বুধবার মালদা টাউন স্টেশনে ভাতিণ্ডা-বালুরঘাট ফরাক্কা এক্সপ্রেস থেকে পাঁচটি বস্তায় ভরা ২৬৮টি বিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় কোনো পাচারকারীকে ধরতে পারেনি পুলিশ। উদ্ধার হওয়া কচ্ছপগুলির মধ্যে ৮৯টি মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
সন্দেহের সূত্রপাত:
রেল পুলিশের কাছে আগে থেকেই খবর ছিল যে, দিল্লি থেকে বালুরঘাটগামী ফরাক্কা এক্সপ্রেসে বিপুল পরিমাণ কচ্ছপ পাচার করা হচ্ছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে মালদা টাউন স্টেশনের জিআরপি থানার কর্মীরা সতর্ক ছিলেন। ট্রেনটি সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে স্টেশনে পৌঁছাতেই জিআরপি কর্মীরা তল্লাশি অভিযান শুরু করেন। একটি অসংরক্ষিত কামরা থেকে পাঁচটি বড় বস্তা উদ্ধার করা হয়, যেগুলোর ভেতর কচ্ছপগুলো ছিল।
জিআরপি-র বক্তব্য:
মালদা টাউন স্টেশন জিআরপি থানার আইসি প্রশান্ত রাই জানান, “আমরা গোপন সূত্রে খবর পেয়েছিলাম। তল্লাশির সময় পাঁচটি বস্তা থেকে মোট ২৬৮টি কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কোনো পাচারকারীকে ধরা সম্ভব হয়নি, তারা সম্ভবত পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেছে।” তিনি আরও জানান যে, উদ্ধার হওয়া কচ্ছপগুলির মধ্যে ৮৯টি মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, উত্তরপ্রদেশ থেকে এই কচ্ছপগুলো পাচার করা হচ্ছিল এবং বালুরঘাট বা তার সংলগ্ন কোনো এলাকায় এগুলো পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। জিআরপি পুলিশ দ্রুত বন দপ্তরকে খবর দেয়।
বন দপ্তরের ভূমিকা:
কচ্ছপ উদ্ধারের খবর পেয়ে মালদা ডিভিশনের ফরেস্ট বিট অফিসার প্রদীপ গোস্বামী জিআরপি থানায় পৌঁছান। তিনি জানান, “উদ্ধার হওয়া কচ্ছপগুলো ‘ইন্ডিয়ান সফট শেল’ প্রজাতির এবং এটি বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইনের শিডিউল ১-এর অন্তর্ভুক্ত, অর্থাৎ এটি একটি বিপন্ন প্রজাতি।” তিনি আরও বলেন, “জীবিত কচ্ছপগুলোকে আদালতের নির্দেশ মেনে তাদের প্রাকৃতিক বাসস্থানে ছেড়ে দেওয়া হবে এবং মৃত কচ্ছপগুলির সৎকার বন্যপ্রাণী বিধি মেনে করা হবে।”
এই ঘটনাটি মালদা টাউন স্টেশন চত্বরে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। যদিও পাচারকারীদের ধরা সম্ভব না হওয়ায় তদন্ত এখনও চলছে। এই ঘটনার মাধ্যমে বন্যপ্রাণী পাচার চক্রের সক্রিয়তা আবারও স্পষ্ট হলো।