মমতার ‘মাস্টারস্ট্রোক’, BJP’র অস্ত্রেই গেরুয়া শিবিরকে মাত! তৃণমূলের ময়দানে নামার প্রস্তুতি তুঙ্গে

ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের রণকৌশল স্থির করতে ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে যে ‘বিধ্বংসী’ বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এবার সেই নির্দেশ বাস্তবায়নের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে জোরকদমে। ‘বাংলা ভাষার উপর মোদি সরকারের সন্ত্রাস’ – এই অভিযোগকে হাতিয়ার করে তৃণমূলনেত্রী সরাসরি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এক সাংস্কৃতিক যুদ্ধের ডাক দিয়েছেন।

সেই নির্দেশ মতোই, আজ বৃহস্পতিবার (২৪শে জুলাই) বিকেল ৩টায় তৃণমূল ভবনে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসছে দল। এই বৈঠকে তৃণমূলের সমস্ত শাখা সংগঠনকে ডাকা হয়েছে। আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হলো, ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত ‘বাংলা ভাষা রক্ষা’ কর্মসূচিকে সফল করা এবং গান্ধী মূর্তির পাদদেশে আয়োজিতব্য প্রতিবাদী কর্মসূচিকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া।

২৭শে জুলাই থেকে ময়দানে তৃণমূল: জেলায় জেলায় মিটিং-মিছিল

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ২১শে জুলাইয়ের ভাষণে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন যে, এই আন্দোলন শুধু ভাষার নয়, বাঙালির অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ২৭শে জুলাই, অর্থাৎ নানুর দিবস থেকে, প্রতি শনি ও রবিবার জেলায় জেলায় মিটিং-মিছিলের আয়োজন করা হবে। তৃণমূলের প্রতিটি স্তরের নেতা-কর্মীদের এই কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের নাগরিক সমাজকে আহ্বান জানিয়েছেন, কলকাতার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে এই ভাষা রক্ষার দাবিতে আয়োজিত ধর্নায় যোগ দিতে। এই বিশাল কর্মসূচির জন্য ২৬শে জুলাইয়ের মধ্যে সমস্ত প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ভাষণে আরও বলেন, “এ লড়াই ভাষা বাঁচানোর লড়াই। এ লড়াই আমাদের লড়তে হবে।” তাঁর এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ‘বাঙালি আবেগ’ এবং ‘ভাষা রক্ষার’ মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলিকে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক মেরুকরণ ঘটাতে চাইছে।

বিজেপির ‘ভাষা-সন্ত্রাস’ ও ‘বাঙালি বিরোধী’ নীতির অভিযোগ তুলে তৃণমূল এই আন্দোলনকে জাতীয় সঙ্গীতকে হাতিয়ার করে আরও তীব্র করতে চাইছে। ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চে মমতা যে সুর বেঁধে দিয়েছিলেন, তৃণমূল ভবনের আজকের বৈঠক সেই সুরকে জেলায় জেলায় ছড়িয়ে দেওয়ার চূড়ান্ত পরিকল্পনা করবে। ২৬-এর নির্বাচনের আগে এই ‘ভাষা যুদ্ধ’ রাজ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কী প্রভাব ফেলে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।