“আমি অসহায়, বাড়িতেই হেনস্থার শিকার হচ্ছি”-কান্নায় ভেঙে পড়লেন অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা এক ভিডিওতে নিজের ভেঙে পড়া মানসিক অবস্থার কথা জানিয়ে সাহায্যের আবেদন করলেন বলিউড অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত। চোখে জল, কাঁপা গলায় তিনি জানান, নিজের বাড়িতেই তিনি নিরাপদ বোধ করছেন না। দিন-রাত হেনস্থার শিকার হচ্ছেন এবং কেউ পাশে দাঁড়াচ্ছেন না। “না হলে দেরি হয়ে যাবে”—এই মন্তব্যে যেন উঁকি দিচ্ছে এক গভীর আতঙ্ক।

ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত ভিডিওতে তনুশ্রী বলেন,

“আমি আমার বাড়িতেই নিরাপদ নই। আমার শরীর-মন দুটোই ভেঙে পড়েছে। কেউ যেন আমায় সাহায্য করেন। আমি একা লড়ছি।”

তিনি জানান, পুলিশকে ফোন করেছিলেন। পুলিশ এসে তাঁকে থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে বলেছে। তবে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে তিনি কবে যাবেন, তাও নিশ্চিত নন।

তনুশ্রীর আরও অভিযোগ, তাঁর বাড়িতে আগেই এক পরিচারিকাকে “প্ল্যান করে” ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যিনি জিনিসপত্র চুরি করছেন। একাধিক বার বাড়ির সামনে অচেনা লোকজন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে বলেও অভিযোগ।

কানের কাছে ‘কাটার’-এর বিকট আওয়াজ, আরেক ভিডিওতে ধ্বংসের চিত্র

আরও একটি ভিডিওতে তনুশ্রী শোনান এক অজানা ভয়ংকর বাস্তব। ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লেখেন:

“আমার বাড়ির ছাদে বা দরজার বাইরে রোজ এমন শব্দ করা হয়। আমি বহুবার হাউজিং সোসাইটিকে জানিয়েছি। তারা কিছুই করেনি।”

তিনি জানান, ২০২০ সাল থেকে এই মানসিক অত্যাচার চলছে। তাই এখন হেডফোনে হিন্দু মন্ত্র শুনেই মনকে স্থির রাখার চেষ্টা করেন।

কারা করছেন এই হেনস্তা, তা এখনও অজানা

এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—কে বা কারা এই মানসিক নির্যাতনের পিছনে রয়েছে? এই বিষয়ে তনুশ্রী এখনো সরাসরি কারও নাম উল্লেখ করেননি। তবে তাঁর কণ্ঠে অসহায়তা স্পষ্ট। ভিডিওর শেষে তাঁর কাতর আবেদন,

“দয়া করে কেউ এগিয়ে আসুন… আর সহ্য হচ্ছে না।”

নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া: সমবেদনা ও উদ্বেগের ঢল

এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে অনুরাগীদের মধ্যে। একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী লিখেছেন,

  • “ভগবান আপনার পাশে থাকুন।”

  • “তথ্য দিন, আমরা সাহায্য করতে চাই।”

  • “পুলিশের কাছে অভিযোগ করুন, আপনি একা নন।”

অভিনয় থেকে বিচ্ছিন্ন, কিন্তু সংবাদ শিরোনামে তনুশ্রী

২০০৫ সালে ‘আশিক বানায়া আপনে’ সিনেমার মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পান তনুশ্রী দত্ত। তবে ২০১০ সালে ‘অ্যাপার্টমেন্ট’-এর পর বলিউড থেকে কার্যত সরে যান তিনি।
২০১৮ সালে ‘#MeToo’ আন্দোলনের সময় অভিনেতা নানা পাটেকর-এর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনে ফের শিরোনামে আসেন। যদিও সেই মামলা তিনি হেরে যান।

শেষ কথা: সিস্টেম কি পাশে দাঁড়াবে?

তনুশ্রীর ভিডিও কেবল একজন অভিনেত্রীর আর্তি নয়, বরং সমাজ ও প্রশাসনের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়—মানসিক নির্যাতনের শিকার কেউ কীভাবে নিজের বাড়িতেই অসুরক্ষিত হয়ে পড়েন? আর এই পরিস্থিতিতে তিনি কি সত্যিই একা?

এখন সকলের দৃষ্টি পুলিশের ভূমিকা ও প্রশাসনের পদক্ষেপের দিকে।