“ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ডিল…”-জাপানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বড় ঘোষণা ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাপানের সঙ্গে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা করেছেন, যা তিনি ‘এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় চুক্তি’ বলে বর্ণনা করেছেন। এই চুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘদিনের বাণিজ্য উত্তেজনার অবসান ঘটেছে দুই দেশের মধ্যে। নতুন করে গড়ে উঠছে বাণিজ্যিক সম্পর্কের এক শক্তিশালী সেতু, যা যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং আর্থিক প্রবাহ সৃষ্টি করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জাপানি বিনিয়োগে আমেরিকায় আর্থিক বিপ্লব
এই চুক্তির অধীনে জাপান যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে রাজি হয়েছে। ট্রাম্পের দাবি, এর ফলে লক্ষ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং আমেরিকার অর্থনীতি অভূতপূর্ব গতিতে এগোবে। পাশাপাশি, জাপান থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর প্রায় ১৫% হারে শুল্ক আরোপ করা হবে, যা আমেরিকান শিল্পের পক্ষে সহায়ক হবে। একইসঙ্গে জাপান তার বাজার খুলে দেবে আমেরিকার কৃষিপণ্য, চাল, ট্রাক ও গাড়ির জন্য।
পুরনো দ্বন্দ্বের ইতি
বহু বছর ধরেই আমেরিকা ও জাপানের মধ্যে বাণিজ্যিক টানাপোড়েন চলছিল। বিশেষত, জাপান আমেরিকান কৃষিপণ্য ও গাড়িকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছিল না, যা নিয়ে ট্রাম্প প্রকাশ্যে অসন্তোষও প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু বহু পর্বের আলোচনার শেষে, ট্রাম্প এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার নেতৃত্বে এক ঐতিহাসিক সমঝোতা হয়। ট্রাম্প একে “দুই দেশের জন্য রোমাঞ্চকর এক অধ্যায়ের সূচনা” বলে আখ্যা দিয়েছেন।
ভারতের দিকে নজর
এই চুক্তির ছায়া ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্কের ওপর পড়বে কিনা, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। বর্তমানে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বছরে প্রায় ১৩১.৮৪ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়, যেখানে ভারতের রপ্তানি ৮৬.৫১ বিলিয়ন ডলার। তবে ট্রাম্প চান, ভারত তার কৃষি ও দুগ্ধ পণ্যের বাজার আমেরিকার জন্য উন্মুক্ত করুক। কিন্তু ভারত পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, তাদের কৃষক এবং দেশীয় উৎপাদন সংরক্ষণই অগ্রাধিকার পাবে।
২০২৫ সালের দিকে নজর
আগামী বছরের ১ অগাস্টের মধ্যে ভারতে কিছু পণ্যের ওপর ২০-২৬% পর্যন্ত শুল্ক চাপানো হতে পারে। তবে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল আশ্বস্ত করেছেন, কোনও চুক্তিই তাড়াহুড়ো করে করা হবে না এবং জাতীয় স্বার্থ বজায় রেখেই আলোচনা চলবে। চলতি বছরের শেষভাগে, অর্থাৎ সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে একটি অন্তর্বর্তী চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনার কথাও উঠে আসছে।
জাপানের সঙ্গে ট্রাম্পের এই বাণিজ্য চুক্তি বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন মোড় আনবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ভারত যদি নিজের অবস্থান শক্ত রেখে আলোচনায় এগোয়, তাহলে ভবিষ্যতে ভারত-মার্কিন সম্পর্কেও একটি কার্যকর ও লাভজনক বাণিজ্যিক চুক্তি হওয়া সম্ভব। তবে চূড়ান্ত ফলাফল কী হবে, তা জানতে এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
Ask ChatGPT