“দেব ভালো ছেলে কিন্তু নিকম্মা….”-ঘাটালের তারকা সাংসদকে তোপ দিলীপ ঘোষের

টলিউড সুপারস্টার ও তৃণমূল সাংসদ দেবকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে উঠেছে। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সরাসরি অভিযোগ করেছেন যে, তৃণমূল কংগ্রেস ষড়যন্ত্র ও ব্ল্যাকমেল করে দেবকে ভোটে দাঁড় করাচ্ছে। একইসঙ্গে, দেবের প্রশংসা করেও ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে কড়া সমালোচনা করেছেন দিলীপ ঘোষ। এই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের জেরে রাজনৈতিক মহলে নতুন করে শোরগোল শুরু হয়েছে।

বর্ষায় বানভাসি ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে সাংসদ দেবের অনুপস্থিতি নিয়ে দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, “দেব ভালো ছেলে। কিন্তু, নিকম্মা ভালো ছেলে! আমার ছেলে কোনও কাজে নেই। কার চাপে সে রাজনীতি করছে? কেন বারে বারে দাঁড়িয়ে ঘাটালের লোককে ধোঁকা দিচ্ছে?” ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান এখনও বাস্তবায়িত না হওয়া সত্ত্বেও বর্ষায় দেবের দেখা না মেলায় বিরোধীরা বারবার প্রশ্ন তুলেছেন। সোমবার ২১শে জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে ফিরে দেব সরাসরি সমাবেশে যোগ দিলেও, নিজের সংসদীয় এলাকায় না আসায় দিলীপ ঘোষ এই প্রশ্নটিকেই আরও জোরালো করেছেন।

কটাক্ষের সুরে দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, “দেব প্রত্যেকবার ভোটে দাঁড়ানোর আগে বলে এ বারে যদি ঘাটালের সমস্যার সমাধান না করি, রাজনীতি ছেড়ে দেব। ও আবার ভোটে দাঁড়ায় আর মানুষ আবার ভোট দেয়। ঘাটালের মানুষকে ছ’মাস জলের মধ্যে থাকতে হয়। ওর কোনও দায়িত্ব নেই! দম থাকে তো ইস্তফা দিক।”

ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে দেবের তীব্র সমালোচনা করলেও, দিলীপ ঘোষ নিজেই দেবের নির্বাচনে দাঁড়ানোর কারণ হিসেবে ‘ব্ল্যাকমেলের’ যুক্তি খাড়া করেছেন। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল ব্ল্যাকমেল ও ষড়যন্ত্র করে অভিনেতাকে ভোটে দাঁড় করাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, “দেবকে ব্ল্যাকমেল করা হয়। গরু পাচারের টাকা নিয়ে তাঁকে যে ডাকা হয়েছিল সেটা তৃণমূলের লোকেরাই ষড়যন্ত্র করে করিয়েছিল। দেবকে বলা হয়, তুমি ভোটে না দাঁড়ালে তোমার সিনেমা বন্ধ করে দেবো। প্রোডাকশন বন্ধ করে দেব। আর সেই কারণেই বাধ্য হয়ে ভোটে দাঁড়াচ্ছে।” এখানেই না থেমে, দেবকে দিলীপ ঘোষ পরামর্শ দেন, “মেদিনীপুরের লোকেদের মেরুদণ্ড রয়েছে। তাঁরা চামচাগিরি করেন না। চোরেদের কাছে মাথা নত করো না। দম থাকলে বেরিয়ে এসো।”

দিলীপ ঘোষের এই বিস্ফোরক অভিযোগের পর ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন। তিনি দিলীপ ঘোষকে কটাক্ষ করে বলেন, “দিলীপ ঘোষের এখন আর কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। কখন কী বলে, কী করে, নিজেই জানে না! আগে নিজেকে নিয়ে ভাবুন, পরে অন্যের সম্পর্কে মন্তব্য করবেন। দেব দেবই! ঘাটালবাসী দেবকে ভালোবাসেন। দেব আবার ভোটে দাঁড়াবেন আর ২ লক্ষ ভোটে জিতবেন।”

এই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এবং আসন্ন নির্বাচনের আগে এটি আরও নতুন বিতর্কের জন্ম দেবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।