মধ্যমগ্রামে ভয়াবহ পথদুর্ঘটনায় ২ জনের মৃত্যু, জনতার রোষে থানা ও কিয়স্কে ভাঙচুর, পুলিশের বিরুদ্ধে ‘টাকা তোলার’ অভিযোগ

মধ্যমগ্রামে এক মর্মান্তিক পথদুর্ঘটনায় দুইজনের মৃত্যু ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল এলাকা। ঘটনায় জড়িত পিকআপ ভ্যানের চালকের পলায়ন এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ‘টাকা তোলার’ অভিযোগ তুলে উত্তেজিত জনতা মধ্যমগ্রাম থানায় ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ এতটাই তীব্র ছিল যে, পুলিশ কড়াকড়ি শুরু করলে তারা পালিয়ে গেলেও, পরিস্থিতি এখনো থমথমে।

দুর্ঘটনার ভয়াবহতা:

জানা গেছে, মধ্যমগ্রামের কাজী নজরুল ইসলাম সরণিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। একটি বাইকে দু’জন আরোহী রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুত গতিতে আসা একটি পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে তাদের সজোরে ধাক্কা লাগে। ঘটনাস্থলেই ২৫ বছর বয়সী এসকে কাসেদের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ৩৮ বছর বয়সী জিয়ারুল রহমানকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে পরে তাঁরও মৃত্যু হয়।

দুর্ঘটনার সময় মাছবোঝাই পিকআপ ভ্যানটিও উল্টে যায়। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে, ঘটনার পরপরই গাড়ির চালক ও খালাসিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। বাইকটি দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং পিকআপ ভ্যানে থাকা মাছের চিহ্ন এখনো স্পষ্ট।

জনতার রোষ ও পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ:

জিয়ারুল রহমানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকার মানুষজন ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের অভিযোগ, দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কীভাবে ঘাতক পিকআপ ভ্যানের চালক পালিয়ে যেতে পারলেন? পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং কর্তব্য পালনে গাফিলতির অভিযোগ তুলে তারা রীতিমতো ফুঁসতে থাকেন।

এই ক্ষোভের রেশ ধরেই উত্তেজিত জনতা মধ্যমগ্রাম থানায় চড়াও হয় এবং সেখানে ভাঙচুর চালায়। তাদের অভিযোগ ছিল, পুলিশ রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে ‘টাকা তোলার’ কাজে ব্যস্ত থাকে, যার ফলে আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে এবং দুর্ঘটনা ঘটলেও তারা যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। এলাকার একটি পুলিশ কিয়ক্সেও ভাঙচুর চালানো হয়, যা পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থার সংকটকে স্পষ্ট করে তোলে।

যদিও পরে পুলিশ কড়াকড়ি শুরু করলে উত্তেজিত জনতা ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায়, তবে এই ঘটনা মধ্যমগ্রামে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। দুর্ঘটনার তদন্ত এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলির বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। থানায় বর্তমানে দুমড়ানো বাইক এবং মাছভর্তি পিকআপ ভ্যানটি রাখা আছে, যা ঘটনার ভয়াবহতার সাক্ষ্য বহন করছে।