উত্তর প্রদেশে CRPF জওয়ানকে মারধর কাঁওয়ারিদের, রেলস্টেশনে চললো ব্যাপক লাথি-ঘুষি

উত্তর প্রদেশের মির্জাপুর রেলওয়ে স্টেশনে কাঁওয়ার যাত্রায় অংশগ্রহণকারী কিছু যুবক কর্তৃক এক CRPF জওয়ানকে নির্মমভাবে মারধরের ঘটনা সামনে আসতেই দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। শনিবার এই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, যেখানে দেখা যাচ্ছে জওয়ানকে বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে এবং কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসছে না।
ঘটনার সূত্রপাত ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেসের টিকিট কাটাকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ, টিকিট কাউন্টারে কাঁওয়ার যাত্রীদের সঙ্গে জওয়ানের বাকবিতণ্ডা হয়, যা দ্রুতই সহিংস রূপ নেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিবাদ চরম আকার ধারণ করলে কাঁওয়ারিরা জওয়ানকে ঘিরে ধরে রেলস্টেশনের মেঝেতে ফেলে দেয়। এরপর তাকে লাথি, ঘুষি ও থাপ্পড় দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, জওয়ান সাহায্যের জন্য আকুতি জানালেও ভিড়ের মধ্যে থেকে কেউ এগিয়ে আসেনি, বরং অনেকেই ঘটনার ভিডিও করতে ব্যস্ত ছিলেন।
পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ ও মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথের প্রতিক্রিয়া:
ঘটনার খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ (GRP) দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মারামারিতে জড়িত ৫ থেকে ৭ জন অভিযুক্তকে তাৎক্ষণিকভাবে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের সকলের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারীর উপর হামলা, অশ্লীলতা এবং শান্তি ভঙ্গের ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভাইরাল ভিডিও এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের ভিত্তিতে অন্যান্য জড়িতদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটলো, যখন সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় কাঁওয়ার যাত্রীদের আচরণ নিয়ে বিতর্ক চলছিল। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিজেও এই বিতর্কের প্রতিবাদ করে বলেছিলেন যে, “কিছু লোক কাঁওয়ার যাত্রা সম্পর্কে মিডিয়ায় ভুল কথা বলে। কেউ কেউ কাঁওয়ারিদের সন্ত্রাসবাদী এবং দুর্বৃত্তও বলে।” তিনি জৌনপুরের একটি ঘটনার উদাহরণ দিয়ে বলেন, যেখানে প্রশাসন তাজিয়ার উচ্চতা নির্ধারণ করেছিল কারণ কিছু লোক তার এবং গাছ কাটার দাবি করেছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা বা গাছ কাটার অনুমতি না দেওয়ায় কিছু লোক নিয়ম ভঙ্গ করে এবং দুর্ঘটনা ঘটে।
মির্জাপুরের এই ঘটনা আবারও কাঁওয়ার যাত্রার মতো ধর্মীয় শোভাযাত্রায় শৃঙ্খলা এবং আইন মেনে চলার গুরুত্ব তুলে ধরেছে। একজন সরকারি কর্মচারীর উপর এমন ন্যাক্কারজনক হামলা কেবল নিন্দনীয়ই নয়, আইনশৃঙ্খলার প্রতি চরম অবমাননাও বটে। পুলিশি তদন্তের পর ঘটনার সম্পূর্ণ সত্য সামনে আসবে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।