“সম্পূর্ণ অনুমানমূলক ও ভিত্তিহীন”-WSJ ও রয়টার্সের রিপোর্ট খারিজ করে নোটিশ পাইলট সংগঠনের

আহমেদাবাদের সাম্প্রতিক এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল (The Wall Street Journal) এবং রয়টার্সের (Reuters) প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা এবং আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারতের পাইলটদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পাইলটস (Federation of Indian Pilots – FIP)। গত ১২ জুন ঘটে যাওয়া এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে সংবাদমাধ্যম দুটি ‘পাইলটের ত্রুটি’কে দায়ী করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, যা নিয়ে এবার আইনি লড়াইয়ে নামছে পাইলট সংগঠন।

ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পাইলটস অভিযোগ করেছে যে, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং রয়টার্সের প্রতিবেদনে কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়াই দুর্ঘটনার জন্য ‘পাইলটের ত্রুটি’কে দায়ী করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভুল এবং বিভ্রান্তিকর। তাদের দাবি, এই ধরনের অনুমানভিত্তিক প্রতিবেদন জনমানসে ভুল বার্তা ছড়াচ্ছে এবং মৃত পাইলটদের সুনাম ক্ষুন্ন করছে।

পাইলট সংগঠনের কড়া বার্তা:

আইনি নোটিশে পাইলট সংগঠন ওই সংবাদসংস্থাগুলিকে অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে। তারা আরও উল্লেখ করেছে যে, প্রতিবেদনগুলি ‘নির্বাচিত’ এবং ‘যাচাই না করেই’ লেখা হয়েছে। ফেডারেশন এক বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়েছে, “এই ধরনের প্রতিবেদন ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’, বিশেষত যেখানে তদন্তই এখনও শেষ হয়নি।”

‘মনোবলে আঘাত’, ‘আতঙ্ক ছড়ানো’র অভিযোগ:

পাইলট সংগঠন তাদের আইনি নোটিশে জোর দিয়ে বলেছে, “আমরা এটা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই যে, এই ধরনের অনুমানমূলক কন্টেন্ট প্রকাশ করাটা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং মৃত পাইলটদের সুনামে আঘাত হেনেছে। রয়টার্স শোকাহত পরিবারগুলিকে বিনা কারণেই কষ্ট দিয়েছে এবং পাইলট সম্প্রদায়ের মনোবলে আঘাত হেনেছে। পাইলটরা অভাবনীয় কাজের চাপের মধ্যে জনসাধারণের স্বার্থে কাজ করে থাকেন।”

সংগঠন আরও জানিয়েছে যে, এই ঘটনা গোটা দেশ তথা বিশ্বের নজর কাড়লেও, এর মানে এই নয় যে সংবাদমাধ্যম কেবল অনুমানের ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। তাদের মতে, এই ধরনের প্রতিবেদন সমাজে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, যা এই পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই কাম্য নয়।

AAIB প্রাথমিক রিপোর্টে কী ছিল?

এয়ারক্রাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (Aircraft Accident Investigation Bureau – AAIB)-এর প্রকাশিত প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘটনার সময় বিমানের ইঞ্জিনের জ্বালানি নিয়ন্ত্রণকারী সুইচটি ‘রান’ (Run) থেকে ‘কাটঅফ’ (Cutoff)-এ চলে গিয়েছিল। এর ফলে উভয় ইঞ্জিনেই জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, এই সুইচ নিয়ে দুই পাইলটের মধ্যে শেষ মুহূর্তে কথাও হয়েছিল।

এখন দেখার, পাইলটদের এই আইনি পদক্ষেপের পর ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং রয়টার্স কী প্রতিক্রিয়া জানায়। তবে এই ঘটনা বিমান দুর্ঘটনা সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের দায়িত্বশীলতার প্রশ্নটি আবারও সামনে নিয়ে এলো।