উন্নয়নের ছোঁয়ায় উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল, রঙিয়া ডিভিশনে পরিকাঠামোগত বিপ্লবের পথে, রেলকর্মীদের স্বাস্থ্য ও প্রশিক্ষণে জোর

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার, শ্রী চেতন কুমার শ্রীবাস্তবের সাম্প্রতিক ব্যাপক পরিদর্শন রঙিয়া ডিভিশনের রেলওয়ে পরিকাঠামো এবং পরিষেবা বৃদ্ধিতে নতুন গতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। যাত্রীদের নিরাপত্তা, অপারেশনাল দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সামগ্রিক উন্নয়ন প্রকল্পগুলির অগ্রগতি নিশ্চিত করতে তিনি বাইহাটা, চাংসারি, কেন্দুকোনা, আগিয়াঠুরি এবং রঙিয়া – এই পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখেছেন। তাঁর এই পরিদর্শন উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের কৌশলগত অগ্রাধিকারে এই অঞ্চলের গুরুত্বকে তুলে ধরেছে।

স্বাস্থ্যসেবা ও প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ:

রঙিয়া রেলওয়ে স্টেশনে জেনারেল ম্যানেজার রঙিয়া রেলওয়ে হাসপাতালের সম্প্রসারণ কাজগুলি বিশেষভাবে পরিদর্শন করেন। রেলওয়ে কর্মচারী এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য উন্নত স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপগুলির প্রশংসা করেন তিনি। এছাড়াও, তিনি ডিভিশনাল ট্রেনিং সেন্টার (MDDTI)-এর পর্যালোচনা করেন, যেখানে সিগন্যাল অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন (S&T) কর্মচারীদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং আধুনিকীকরণকৃত শ্রেণীকক্ষ ও কর্মশালার সুবিধা তৈরির প্রচেষ্টা চলছে। এই উদ্যোগগুলি রেলকর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে আরও সক্ষম করে তুলতে সহায়ক হবে।

গতি-শক্তি কার্গো টার্মিনালের মাধ্যমে বাণিজ্যিক বিপ্লব:

পরিদর্শনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বাইহাটায় নতুন গতি-শক্তি কার্গো টার্মিনাল (GCT) এর উন্নয়ন, যা অচিরেই চালু হতে চলেছে। এই অত্যাধুনিক টার্মিনালটি তিনটি ডেডিকেটেড পণ্য লাইন, একটি ইলেকট্রনিক ইন-মোশন ওয়েব্রিজ, ডাবল গুডস প্ল্যাটফর্ম, ২৪x৭ পরিচালনার জন্য হাই-মাস্ট লাইটিং এবং অটোমোবাইল হ্যান্ডলিং-এর জন্য একটি বিশেষ র‍্যাম্প নিয়ে গঠিত। প্রতি মাসে ২৫টিরও বেশি মালবাহী রেক হ্যান্ডলিং-এর ক্ষমতা সম্পন্ন এই টার্মিনালটি এই অঞ্চলের বাণিজ্যিক পরিবহনে এক বিপ্লব আনবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা স্থানীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে।

স্টেশন উন্নয়ন ও রেলওয়ে কলোনিতে নজর:

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা জানান, জেনারেল ম্যানেজার বর্তমানের স্টেশন উন্নয়নমূলক কাজগুলিও পর্যালোচনা করেছেন। পাশাপাশি, সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনিগুলি পরিদর্শন করে ফ্রন্টলাইন কর্মচারীদের আবাসন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা উন্নত করার গুরুত্বের উপর জোর দেন। প্রতিকূল ভৌগোলিক পরিবেশে কাজ করা এই জোনের রেল কর্মচারী ও আধিকারিকদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের সমস্ত কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করাই ছিল এই পরিদর্শনের অন্যতম লক্ষ্য।

শ্রী চেতন কুমার শ্রীবাস্তবের এই পরিদর্শন শুধুমাত্র রেলওয়ে পরিকাঠামোর প্রযুক্তিগত উন্নতির উপরই নয়, বরং রেলকর্মীদের কল্যাণ এবং স্থানীয় অর্থনীতির বিকাশের প্রতিও উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের গভীর অঙ্গীকারের ইঙ্গিত বহন করছে। এই প্রকল্পগুলি এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বাণিজ্যিক সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।