লজ্জাজনক ঘটনা, স্নানঘরের দিকে সিসি ক্যামেরা তাক করায় প্রতিবাদ, বৃদ্ধাকে মারধরের অভিযোগ

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ভঙ্গের এক জঘন্য অভিযোগ উঠেছে নদিয়ার শান্তিপুরে। একাকী বসবাসকারী এক বৃদ্ধার বাড়ির স্নানঘরের দিকে সিসি ক্যামেরা তাক করায় প্রতিবাদ জানাতে গেলে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে শান্তিপুর থানার গয়েশপুর পঞ্চায়েত এলাকায়, যা স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
স্নানঘরের দিকে সিসি ক্যামেরা: গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগ
আক্রান্ত বৃদ্ধা মনোহরা বিবি অভিযোগ করেছেন যে, প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন মণ্ডল তাঁদের বাড়ির স্নানঘরের দিকে তাক করে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছেন। বৃদ্ধার সঙ্গে তাঁর নাতবউ একাই বাড়িতে থাকেন, কারণ নাতি কর্মসূত্রে বিদেশে থাকেন। এই ক্যামেরা তাঁদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে চরমভাবে লঙ্ঘন করছে বলে তাঁদের অভিযোগ। এই বিষয়ে বারবার আপত্তি জানানো সত্ত্বেও কোনো সুরাহা হয়নি।
প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে মারধর
বৃদ্ধা মনোহরা বিবি জানান, গতকাল তিনি আনোয়ার হোসেন মণ্ডলের কাছে গিয়ে আবারও ক্যামেরাটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এরপরই আনোয়ার হোসেন মণ্ডল চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন এবং তাঁর ভাই আমির হোসেন মণ্ডল বৃদ্ধার উপর চড়াও হয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন। এই ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় বৃদ্ধাকে শান্তিপুর হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।
পুলিশে অভিযোগ ও তদন্ত শুরু
আক্রান্ত বৃদ্ধার পক্ষ থেকে গয়েশপুর পঞ্চায়েত আনোয়ার হোসেন মণ্ডল, আমির হোসেন মণ্ডল এবং তাঁদের পরিবারের বিরুদ্ধে শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। শান্তিপুর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় এদিন আবারও তাঁকে শান্তিপুর হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসতে হয় এবং তিনি থানায় চিকিৎসার কাগজপত্র জমা দিয়েছেন।
অভিযুক্তের অস্বীকার: পালটা অভিযোগ
তবে, মারধরের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন মণ্ডল। তাঁর দাবি, সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে তাঁদের বাড়ির কিছুই দেখা যায় না, বরং বোমা-বারুদের ব্যবসা সংক্রান্ত অভিযোগ রয়েছে বলে তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি মারধরের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন।
শান্তিপুর থানার পুলিশ লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনা একদিকে যেমন ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, তেমনি প্রতিবেশীদের মধ্যে বিবাদ কীভাবে সহিংস রূপ নিতে পারে, তারও এক দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। পুলিশের তদন্তের পরেই এই ঘটনার প্রকৃত সত্য উন্মোচিত হবে।