বদলে গেল আবহাওয়ার ‘মুড’! কলকাতায় স্বস্তির সূর্যোদয়, উত্তরবঙ্গে চলবে খেলা; জারি সতর্কতা

টানা কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণে নাজেহাল কলকাতাবাসীর জন্য বৃহস্পতিবার সকালে এক ঝলক স্বস্তি নিয়ে এল মেঘমুক্ত ঝলমলে আকাশ। ছাতা ছাড়া রাস্তায় বেরনো একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়েছিল, এবং রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছিল। তবে, আজ সকালে আকাশের ‘মুড’ বদল হয়েছে, এবং বঙ্গোপসাগর থেকে নিম্নচাপ ভিনরাজ্যে পাড়ি দেওয়ায় দক্ষিণবঙ্গে আপাতত ভারী বৃষ্টির হাত থেকে মুক্তি মিলেছে।

দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি কমছে, বাড়বে অস্বস্তি:

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। যে কয়েটকটি জেলায় বৃষ্টি হবে, সেখানে হালকা ও বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হতে পারে।

তবে, বৃষ্টির পরিমাণ কমার সাথে সাথে দক্ষিণবঙ্গে অস্বস্তি বাড়বে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরমের অনুভূতি বাড়বে এবং তাপমাত্রা ধীরে ধীরে উর্ধ্বমুখী হবে।

আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বুধবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা থাকবে ৯৫ থেকে ৯৯ শতাংশ, এবং গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৩.৬ মিলিমিটার।

উত্তরবঙ্গে মহাবৃষ্টির পূর্বাভাস: দার্জিলিং, জলপাইগুড়িতে অতি সতর্কতা:

দক্ষিণবঙ্গের ঠিক উল্টো চিত্র দেখা যাবে উত্তরবঙ্গে। আগামী শনিবার, অর্থাৎ ১৯শে জুলাই থেকে ২১শে জুলাই পর্যন্ত উত্তরের একাধিক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে ২০শে জুলাই দার্জিলিং ও আশপাশের অঞ্চলে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে।

রবিবার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির জন্য কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সোমবার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। তবে, মঙ্গলবার থেকে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ কমার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে।

মৌসুমী অক্ষরেখার গতিপথ:

জানা গেছে, মৌসুমী অক্ষরেখা বর্তমানে পাকিস্তান সংলগ্ন রাজস্থান থেকে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এই অক্ষরেখা উত্তর প্রদেশ ও বিহারের উপর দিয়ে বাঁকুড়া হয়ে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। এই মৌসুমী অক্ষরেখার অবস্থান এবং বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের গতিপথের ওপরই রাজ্যের আগামী কয়েক দিনের আবহাওয়া নির্ভর করছে।

সামনের দিনগুলোতে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ার এই দ্বিমুখী আচরণ রাজ্যবাসীকে মিশ্র অভিজ্ঞতা দেবে। একদিকে যখন দক্ষিণে গরম ও আর্দ্রতার অস্বস্তি বাড়বে, তখন উত্তরে ভারী বৃষ্টির ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।