১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়ল ভারতের ‘আকাশ প্রাইম’ মিসাইল, পরীক্ষায় বড় সাফল্য পেল DRDO

ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করতে এক যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করল ভারতীয় সেনাবাহিনী। বুধবার লাদাখের ১৫,০০০ ফুটেরও বেশি উচ্চতায়, দেশের তৈরি অত্যাধুনিক ‘আকাশ প্রাইম’ ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO)-র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় সেনাবাহিনীর বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিটের এই পরীক্ষা ভারতের সামরিক সক্ষমতাকে নতুন মাত্রা দিল।

প্রতিরক্ষা আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র বিরল বায়ুমণ্ডলে এবং চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দ্রুত গতিশীল লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে। এই সফল পরীক্ষা প্রমাণ করে যে, প্রকৃত যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ‘আকাশ প্রাইম’ কতটা কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।

‘আকাশ প্রাইম’ ক্ষেপণাস্ত্রটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর তৃতীয় এবং চতুর্থ আকাশ রেজিমেন্টের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। উল্লেখ্য, এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এর আগেও ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময় নিজের কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে, যেখানে এটি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চীনা জেট এবং তুর্কি ড্রোনকে সফলভাবে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছিল।

এই উন্নত সংস্করণের ‘আকাশ প্রাইম’ ক্ষেপণাস্ত্রে রয়েছে অত্যাধুনিক ‘রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি সিকার’। এই যন্ত্রের সাহায্যে ক্ষেপণাস্ত্রটি লক্ষ্যবস্তুকে সহজেই খুঁজে বের করতে এবং অনুসরণ করতে সক্ষম হয়। এটি অতিউচ্চতায় এবং অত্যন্ত কম তাপমাত্রায় কাজ করার জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যা লাদাখের মতো দুর্গম অঞ্চলে এর কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে।

পরীক্ষার সময়, রাডার, ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল টার্গেটিং সিস্টেম (EOTS) এবং টেলিমেট্রি স্টেশন-সহ বিভিন্ন রেঞ্জ স্টেশন থেকে ক্ষেপণাস্ত্রের গতিপথ এবং ফ্লাইটের ডেটা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এই তথ্যগুলি ক্ষেপণাস্ত্রের নির্ভুলতা এবং কর্মক্ষমতা সম্পর্কে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করবে।

লাদাখের মতো স্পর্শকাতর অঞ্চলে এই দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি কেবল দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই নয়, ‘আত্মনির্ভর ভারত’ এবং সামরিক স্বনির্ভরতার দিকে ভারতের অগ্রগতিরও এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।