নিক্কো পার্কে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, ওয়াটার রাইডে অসুস্থ হয়ে যুবকের মৃত্যু, নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

কলকাতার জনপ্রিয় নিক্কো পার্কে বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন এক যুবক। বুধবার এই ঘটনাটি ঘটেছে, যেখানে ওয়াটার রাইড করার সময় আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি; চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই আকস্মিক মৃত্যুতে পার্কে উপস্থিত অন্যান্য পর্যটকদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
ঘটনার বিবরণ ও পুলিশের তদন্ত
মৃত যুবকের নাম রাহুল দাস (২৯), যাঁর বাড়ি বিধাননগর এলাকাতেই। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ। ঘটনার পরই বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়ে নিক্কো পার্কের সিইও রাজেশ রাইসিংহানির সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ আধিকারিকরা।
সিইও রাজেশ রাইসিংহানি জানান, “কর্তব্যরত লাইফ গার্ডরা দেখেন, এক যুবক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ৫-৬ জন মিলে দেখে একটি রাইডের সিঁড়ি দিয়ে তাঁকে নামিয়ে আনছে। সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা যুবককে মৃত বলে জানান।”
এদিকে, বিধাননগরের ডিসি অনীস সরকার এই বিষয়ে বলেন, “মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই যুবক অস্বস্তি বোধ করছিলেন। তবে কাউকে কিছু জানাননি। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
এই ঘটনা নিক্কো পার্কের পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এবং পার্কে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে।
নিক্কো পার্কে পূর্বের দুর্ঘটনা ও নিরাপত্তা বিতর্ক
উল্লেখ্য, নিক্কো পার্কে দুর্ঘটনার খবর এই প্রথম নয়। এর আগে ২০১২ সালেও একটি মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেছিল, যখন একটি জয় রাইড ভেঙে পড়েছিল। যদিও সেই ঘটনায় ১৫ জন আহত হলেও কোনো নিহতের খবর মেলেনি। প্রায় ১৩ বছর পর ফের নিক্কো পার্কে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটল, যেখানে একজন যুবক প্রাণ হারালেন। এই ঘটনা পার্কের রাইডগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ও জরুরি সুরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
ফাঁসিদেওয়া: বাবার অবৈধ সম্পর্কের জেরে ছেলেকে হাতে খুন, চা বাগানে মর্মান্তিক ঘটনা
ফাঁসিদেওয়া, শিলিগুড়ি, ১৬ জুলাই ২০২৫: শিলিগুড়ি মহকুমা ফাঁসিদেওয়া ব্লকের ঘোষপুকুর এলাকার কান্তি ভিটা গ্রামে বাবার অন্য মহিলার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের কথা সহ্য করতে না পেরে ছেলেকে হাতে খুন হওয়ার এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মেরে বাবাকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, মাঝেমধ্যেই বাবা বুজুর মুর্মু এবং ছেলে প্রতাম মুর্মুর মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত। বুধবারও ঠিক একইভাবে বাবা ও ছেলের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়, যা দ্রুত হাতাহাতিতে গড়ায়। এরপরই ছোট ছেলে প্রতাম মুর্মু চা বাগানে ব্যবহৃত একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার বাবাকে গলায় কোপ মারে। রক্তাক্ত অবস্থায় বুজুর মুর্মু মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকার মানুষ ছুটে আসে এবং ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরবর্তীতে খবর পেয়ে ফাঁসিদেওয়া থানা ও ঘোষপুকুর ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত ছেলে প্রতাম মুর্মুকে গ্রেফতার করে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম বুজুর মুর্মু এবং অভিযুক্ত ছেলের নাম প্রতাম মুর্মু। মৃতের স্ত্রী মঞ্জুলা টিগা জানিয়েছেন, স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। ফাঁসিদেওয়া ঘোষপুকুর ফাঁড়ির পুলিশ এই সমস্ত ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে।