কুয়োয় ইসিএল কর্মীর রহস্যজনক দেহ উদ্ধার, খুনের অভিযোগ পরিবারের

পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরে বহুলা পঞ্চায়েতের পরাশকোল সংলগ্ন পদ্মাবতী মন্দির এলাকার একটি কুয়ো থেকে কানাইয়া লোহার (৫৮) নামে এক ইসিএল (ECL) কর্মীর রহস্যজনক মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। বুধবার ভোরে তাঁর দেহ কুয়োর জলে ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। এই ঘটনায় পরিবার খুনের চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছে। পাণ্ডবেশ্বর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে।

উদ্ধার ও প্রাথমিক তথ্য
বুধবার সকালে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পাণ্ডবেশ্বর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কুয়ো থেকে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। মৃত কানহাইয়া লোহার ইসিএল-এর জামবাদ কোলিয়ারির কর্মী ছিলেন এবং তিনি আদতে উত্তরপ্রদেশের কুশিনগরের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে পরাশকোলে খনি আবাসনে থাকতেন।

পরিবারের অভিযোগ: ‘খুনের চক্রান্ত’
মৃত কানহাইয়ার বড় ছেলে অনিল শর্মা জানান, তাঁর বাবা দীর্ঘদিন ধরে কাজে যাচ্ছিলেন না। সোমবার উত্তরপ্রদেশের গ্রামের বাড়ি থেকে তিনি পাণ্ডবেশ্বর ফেরেন এবং মঙ্গলবার কর্মস্থলে যোগ দেন। অনিলের অভিযোগ, মঙ্গলবার বেলা ১২টার পর থেকে কানহাইয়ার মোবাইলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাত পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়, কিন্তু তাঁকে কোথাও পাওয়া যায়নি। বুধবার সকালে কুয়োর জল থেকে তাঁর বাবার দেহ উদ্ধার হয়।

অনিল শর্মা আরও বলেন, “বাবা উত্তরপ্রদেশের কুশিনগরে গ্রামের বাড়ি থেকে সোমবার দিন পাণ্ডবেশ্বর আসেন। কাজে যোগ দেন। ওইদিন বেলা বারোটা পর্যন্ত বাবার সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। বাবাকে পাঠক নামের কোনও এক ব্যক্তি ১৭ হাজার টাকা ইএমআই দেওয়ার কথা ফোনে বলেছিল। বাবার মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। আমাদের সন্দেহ বাবাকে কেউ খুন করেছে।”

তিনি জানান, ফোন করে বলা হয় ১৭ হাজার ৫০০ টাকা ইএমআই বাকি আছে এবং ওই টাকা শোধ করলে মোবাইল ফোনটি চালু হয়ে যাবে। অনিলের আশঙ্কা, যে বা যারা ফোনটি করেছিল, তারাই তাঁর বাবাকে আটকে রেখে খুন করে থাকতে পারে।

পুলিশের তদন্ত ও প্রতিবেশীর বক্তব্য
প্রতিবেশী সুভাষ বাউরী বলেন, “আজ সকালে এলাকার মানুষ কুয়োর জল তুলতে এসে জলে মৃতদেহ ভাসতে দেখে। ওর পরিবারের সবাই উত্তরপ্রদেশেই ছিল। আজ সকালে ওনার ছেলে আসে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। কী কারণে এই মৃত্যু, তা পুলিশ তদন্তের পরেই জানা যাবে।”

অন্ডালের এসিপি পিন্টু সাহা জানিয়েছেন, এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেই এটি খুন নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু, তা পরিষ্কার হবে। ইসিএল কর্মীর এই রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।