নিক্কো পার্কে ওয়াটার রাইডে মৃত্যু ১৮ বছর বয়সী যুবকের, শোকে মৃতের পরিবার

কলকাতার অন্যতম জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র নিক্কো পার্কে আবারও এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটল। বুধবার দুপুরে ওয়াটার পার্কের ‘নায়াগ্রা ফলস’-এর নিচে স্নান করতে গিয়ে ১৮ বছর বয়সী এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মৃত যুবকের নাম রাহুল দাস, যিনি আগে উল্টোডাঙার মুরারিপুকুরে থাকলেও বর্তমানে বাগুইআটির বাসিন্দা ছিলেন। এই ঘটনায় পার্কের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
পুলিশ ও পার্ক কর্তৃপক্ষের সূত্রে খবর, বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ রাহুল তাঁর সাতজন বন্ধুর সঙ্গে নিক্কো পার্কে আসেন। সবার সঙ্গে তিনি ওয়াটার পার্কে স্নান করতে নামেন। হঠাৎ করেই রাহুল অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং জলেই লুটিয়ে যান। তাঁর বন্ধুরা দ্রুত তাঁকে জল থেকে তুলে আনেন। পার্ক কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। কিন্তু রাহুলের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তড়িঘড়ি তাঁকে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রাহুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ হাসপাতালে পৌঁছায় এবং মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। এত অল্প বয়সে এবং হঠাৎ করে রাহুলের মৃত্যু কীভাবে হলো, তা নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। তদন্তকারীরা ইতিমধ্যেই তাঁর বন্ধুদের সাথে কথা বলে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ সংগ্রহ করছেন।
এই দুর্ঘটনার পর নিক্কো পার্কে এক আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। অন্যান্য পর্যটকরা পার্কের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আপাতত ওয়াটার পার্কের সমস্ত আকর্ষণ বন্ধ রাখা হয়েছে। নিক্কো পার্ক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, তাদের লাইফ গার্ড দেখতে পান যে রাহুলের এক বন্ধু তাঁকে জল থেকে টেনে তুলছেন। লাইফ গার্ড ছুটে গিয়ে দেখেন রাহুল অজ্ঞান হয়ে গেছেন। এরপর অ্যাম্বুলেন্স ডেকে দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে নিকো পার্কের একটি জয়রাইড ভেঙে ১৫ জন দর্শনার্থী আহত হয়েছিলেন, যা পার্কের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছিল। এক দশকেরও বেশি সময় পর আবারও নিক্কো পার্ক কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ল। এই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট এবং রাহুলের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে অপেক্ষায় রয়েছে তাঁর পরিবার এবং প্রশাসন।