মাটির গভীরে ২ হাজার বছরের পুরোনো সভ্যতার নিশান! ভারতের ইতিহাস নতুন করে লেখার ইঙ্গিত

ভারতের ইতিহাসে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের সম্ভাবনা নিয়ে সামনে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। আইআইটি কানপুরের বিশেষজ্ঞরা হরিয়ানার যমুনানগর জেলার টোপরা কালান গ্রামে বিশেষ প্রযুক্তিতে মাটির নিচে যা খুঁজে পেয়েছেন, তা দেখে মনে করা হচ্ছে দেশের চেনা ইতিহাস নতুন করে লেখার প্রয়োজন হতে পারে।

কোনোরকম খননকার্য ছাড়াই, কেবলমাত্র অ্যাডভান্সড গ্রাউন্ড পেনিট্রেটিং রাডার প্রযুক্তি ব্যবহার করে আইআইটি কানপুরের বিশেষজ্ঞদের একটি দল মাটির ৬ থেকে ৭ ফুট নিচে কিছু বিশেষ কাঠামো শনাক্ত করেছেন। তাঁরা গোলাকার কিছু স্থাপত্য, পুরোনো দেওয়াল এবং কিছু ঘর বা চেম্বারের অস্তিত্ব পেয়েছেন। যদিও এগুলির ভেতরে কী রয়েছে, তা এখনও দেখা সম্ভব হয়নি।

বিশেষজ্ঞদের প্রাথমিক অনুমান, মাটির নিচে থাকা এই স্থাপত্যগুলি প্রায় ২ হাজার বছর পুরোনো। আইআইটি কানপুরের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক জাভেদ মালিকের মতে, এই গোলাকার কাঠামোটি সম্ভবত একটি বৌদ্ধ স্তূপ। যদি তাঁদের এই অনুমান সত্যি হয়, তাহলে ভারতে বৌদ্ধধর্মের ব্যাপ্তি কোথায় পৌঁছেছিল, তার ইতিহাস নতুন করে লিখতে হবে।

এই আবিষ্কারের গুরুত্ব উপলব্ধি করে আইআইটি কানপুরের বিশেষজ্ঞ দলটি ইতিমধ্যেই আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (ASI)-এর কাছে ওই অংশে খননকার্য চালানোর জন্য অনুমতি চেয়েছে। তাঁরা মনে করছেন, মাটি খুঁড়ে এই কাঠামো গুলি চোখে দেখতে পেলে সেগুলির সঠিক ইতিহাস নির্ধারণ করা অনেক সহজ হবে। কোন সময়ের, কারা তৈরি করেছিল, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। অধ্যাপক জাভেদ মালিক এই আবিষ্কারকে ‘ইতিহাস বদলে দেওয়া আবিষ্কার’ বলেই মনে করছেন।

তাঁর মতে, কেবল এই একটি কাঠামোই নয়, খননকার্য চালালে হয়তো আরও বিশাল জায়গা জুড়ে এমন কাঠামো পাওয়া যেতে পারে। প্রসঙ্গত, টোপরা কালান গ্রাম বা তার আশপাশের এলাকায় মাটির উপরেও কিছু অতি প্রাচীন ইটের অস্তিত্বের সন্ধান আগেই পেয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। শুধু টোপরা কালান গ্রাম নয়, এই বিশেষজ্ঞ দলটি আরও তিনটি ভিন্ন স্থানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে ইতিহাসের খোঁজে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এই নতুন আবিষ্কার ভারতের প্রত্নতত্ত্ব গবেষণায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে।