কলকাতায় শুভেন্দুর পাল্টা মিছিল, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মমতাকে তীব্র আক্রমণ

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ফের সরগরম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিছিলের পাল্টা হিসেবে আজ কলকাতায় বিরাট মিছিল করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মিছিল শেষে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি জমা দেন তিনি। সেখানেই বাংলাদেশ এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন শুভেন্দু।

এদিন ধর্মতলায় শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির এই পাল্টা মিছিল ব্যাপক সাড়া ফেলে। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন দলের বহু নেতা-কর্মী ও সমর্থক। তৃণমূলের মিছিলে যখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং এনআরসি-সিএএ ইস্যুকে সামনে রেখে কেন্দ্রকে নিশানা করা হচ্ছিল, তখন শুভেন্দুর মিছিলে মূলত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং বিশেষ করে অনুপ্রবেশ ও রোহিঙ্গা ইস্যুকেই বড় করে তুলে ধরা হয়।

মিছিল শেষে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কার্যত বোমা ফিন্দেন। তাঁর সরাসরি অভিযোগ, “ভোটার লিস্ট থেকে অবিলম্বে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাদ দিতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রোহিঙ্গাদের স্বার্থে পথে নেমেছেন।” এই মন্তব্য করে শুভেন্দু রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে এক গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরলেন।

তিনি আরও বলেন, “রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশকারী। তারা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এদের ভোটার তালিকায় থাকা মানে দেশের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্ন করা। নির্বাচন কমিশনকে এই বিষয়ে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে কোনও অবৈধ অনুপ্রবেশকারী যেন ভোটার হতে না পারে।”

শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্য স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এখনও এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না এলেও, রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর জল্পনা। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে রোহিঙ্গা এবং অনুপ্রবেশ ইস্যুকে শুভেন্দু অধিকারী যেভাবে সামনে আনলেন, তা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। মনে করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে তিনি একদিকে যেমন সংখ্যালঘু ভোটব্যাংকে ফাটল ধরাতে চাইছেন, তেমনি হিন্দুত্ববাদী ভোট একত্রিত করারও চেষ্টা করছেন। তবে এই “রোহিঙ্গা কার্ড” শেষ পর্যন্ত কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলবে।