বিশেষ: কেন পুরুষরা অন্য নারীর প্রতি আকৃষ্ট হন? চাণক্য নীতিতে খুঁজে নিন কারণ ও সমাধান

আচার্য চাণক্য, যিনি কৌটিল্য বা বিষ্ণুগুপ্ত নামেও পরিচিত, ছিলেন ভারতের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী পণ্ডিতদের একজন। তিনি শুধু একজন মহান অর্থনীতিবিদ, শিক্ষক এবং কূটনীতিকই ছিলেন না, বরং তাঁর অমর গ্রন্থ ‘চাণক্য নীতি’-তে জীবনের প্রতিটি দিককে সহজ ও নির্ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। একটি পুরনো প্রবাদ আছে যে, মানুষ অন্যের স্ত্রী এবং অন্যের টাকাকে নিজের চেয়েও বেশি পছন্দ করে। বর্তমান সময়ে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের যে ক্রমবর্ধমান ঘটনা সামনে আসছে, যা অসংখ্য সুখী পরিবার ভেঙে দিচ্ছে, তার কারণগুলিও চাণক্য নীতিতে বিশদে আলোচনা করা হয়েছে।

পুরুষদের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের নেপথ্যে যে কারণগুলি:
চাণক্য নীতিতে বিবাহিত পুরুষদের তাঁদের স্ত্রী থেকে দূরে সরে গিয়ে অন্য নারীর প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার বা বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপনের বেশ কিছু কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলি হলো:

অল্প বয়সে বিয়ে: অপরিণত বয়সে বিবাহ অনেক সময় ভবিষ্যতে অন্য সম্পর্কের দিকে ঠেলে দেয়।

পছন্দ ছাড়াই বিয়ে বা জোরপূর্বক বিয়ে: নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বা জোর করে বিয়ে হলে সেই সম্পর্কে ভালোবাসা ও বন্ধন তৈরি হতে পারে না, যার ফলে অন্য কোথাও শান্তি খোঁজার প্রবণতা বাড়ে।

শারীরিক দূরত্ব: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক দূরত্ব তাদের মধ্যে মানসিক এবং শারীরিক ব্যবধান তৈরি করে।

অগ্রাধিকারের পরিবর্তন: যখন একজন ব্যক্তি তার স্ত্রীর চেয়ে অন্য বিষয় বা ব্যক্তিকে বেশি প্রাধান্য দিতে শুরু করেন, তখন সম্পর্কের মধ্যে ফাটল ধরে।

আত্মনিয়ন্ত্রণের অভাব: ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণ হারানোর ফলে পুরুষরা ভুল পথে পরিচালিত হতে পারেন।

ভুল সঙ্গ: খারাপ বা অসৎ সঙ্গের প্রভাবেও একজন পুরুষ পরকীয়ার দিকে ঝুঁকতে পারেন।

এই কারণগুলির ফলেই অনেক সময় সুখী ঘর ও পরিবার ভেঙে যায়, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ছিন্ন হয়। তবে চাণক্য নীতিতে এও বলা হয়েছে যে, অনেক সময় এই ভুলের জন্য ব্যক্তি পরে খালি হাতে ফিরে আসেন এবং নিজের ভুলের জন্য অনুতপ্ত হন।

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক শক্তিশালী করার চাণক্য নীতি:
চাণক্য নীতি কেবল সমস্যার কারণ উল্লেখ করেই থেমে থাকেনি, বরং স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার এবং ভাঙন থেকে রক্ষা করার উপায়ও বাতলে দিয়েছে। এর জন্য বলা হয়েছে:

দৃঢ় যোগাযোগ: স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের সঙ্গে দৃঢ় এবং খোলাখুলি যোগাযোগ বজায় রাখা উচিত।

সমস্যার সমাধান: যদি কোনো সমস্যা হয়, তবে উভয়েরই কথা বলে তার সমাধান করা উচিত, সমস্যা পুষে রাখা উচিত নয়।

ভালোবাসা ও বোঝাপড়া: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা বজায় রাখার জন্য ছোট ছোট বিষয়গুলির যত্ন নেওয়া এবং একে অপরকে গভীরভাবে বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

একসঙ্গে সময় কাটানো: তাঁদের একে অপরের সঙ্গে ভালো সময় কাটানো উচিত, যা সম্পর্কের বাঁধন মজবুত করে।

চাণক্য নীতি আজও পারিবারিক সম্পর্ক, নৈতিকতা এবং জীবনে সুখী থাকার পথে এক নির্ভুল দিশারী হিসেবে প্রাসঙ্গিক।