পেট্রোল ২৭২ টাকা, পাকিস্তানের হাল দিন দিন হচ্ছে খারাপ, বাড়ছে সব জিনিসের দাম!

অর্থনৈতিক সংকটে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের উপর আবারও মুদ্রাস্ফীতির বোঝা চাপালো শাহবাজ শরিফ সরকার। বুধবার থেকে দেশটিতে পেট্রোল ও হাই স্পিড ডিজেলের দাম বাড়ানো হয়েছে, যা এমনিতেই নাজুক জনজীবনকে আরও বিপর্যস্ত করে তুলেছে। আইএমএফ, বিশ্বব্যাঙ্কসহ বিভিন্ন উৎস থেকে বিপুল ঋণ নিয়েও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে হিমশিম খাচ্ছে প্রতিবেশী দেশটি।

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন মূল্য: বুধবার থেকে কার্যকর
মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তানের অর্থ বিভাগ থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম ৫.৩৬ পাকিস্তানি রুপি বৃদ্ধি পেয়ে ২৬৬.৭৯ রুপি থেকে ২৭২.১৫ রুপিতে দাঁড়িয়েছে। একইসঙ্গে, হাই স্পিড ডিজেলের (HSD) দাম প্রতি লিটারে ১১.৩৭ পাকিস্তানি রুপি বেড়ে ২৭২.৯৮ রুপি থেকে ২৮৪.৩৫ রুপিতে উন্নীত হয়েছে। এই নতুন মূল্য আগামী ১৫ দিনের জন্য কার্যকর থাকবে।

সরকার এই মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের ওঠানামাকে দায়ী করেছে। যদিও এই বিশাল বৃদ্ধি পাকিস্তানের গাড়িচালক এবং পরিবহন অপারেটরদের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে, যা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জুলাই মাসে দ্বিতীয় দফা মূল্যবৃদ্ধি: মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের প্রভাব
পাকিস্তানে জ্বালানির দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এটি জুলাই মাসে দ্বিতীয়বারের মতো জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি। এর আগে, গত ১লা জুলাই ফেডারেল সরকার মাসের প্রথম দুই সপ্তাহের জন্য পেট্রোল ও ডিজেলের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছিল। তখন এর পিছনে ১২ দিনের ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামে অস্থিরতাকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।

আমদানি নির্ভরতা ও অর্থনৈতিক চাপ
পাকিস্তান বিশ্বের প্রধান তেল আমদানিকারক দেশগুলির মধ্যে অন্যতম, এবং নিজেদের পেট্রোলিয়াম চাহিদার প্রায় ৮৫ শতাংশই তারা আমদানি করে। সাম্প্রতিক অতীতে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সরাসরি এর সরবরাহে প্রভাব ফেলেছে। পাকিস্তানে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম প্রতি দুই সপ্তাহ অন্তর পর্যালোচনা করা হয় এবং আন্তর্জাতিক অপরিশোধিত তেলের দাম এবং স্থানীয় মুদ্রা বিনিময় হারের পরিবর্তনের উপর ভিত্তি করে এই দাম সংশোধন করা হয়।

জ্বালানির এই লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি পরিবহন, কৃষি এবং শিল্প খাতে সরাসরি প্রভাব ফেলবে, কারণ জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ফলে অন্যান্য পণ্য ও পরিষেবার দামও স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যাবে। এই পরিস্থিতি পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় আরও বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।