বেঙ্গালুরুতে নৃশংস হত্যাকাণ্ড! বিপাকে বিজেপি বিধায়ক, তদন্তে নেমেছে পুলিশ

বেঙ্গালুরুর হালাসুর এলাকায় শিবপ্রকাশ ওরফে বিকলু শিবা নামে এক ব্যক্তির নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার রাতে তাঁর বাড়ির কাছে দুষ্কৃতীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁর মৃত্যু হয়। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কৃষ্ণরাজপুরমের বিজেপি বিধায়ক এবং কর্ণাটকের প্রাক্তন মন্ত্রী ব্যরাথি বাসভরাজের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত শিবপ্রকাশের মা বিজয়লক্ষ্মী এই এফআইআর দায়ের করেছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে শিবপ্রকাশ তাঁর বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সে সময় একটি গাড়িতে করে একদল দুষ্কৃতী তাঁর সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর উপর হামলা চালায়। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় শিবপ্রকাশের মৃত্যু হয়। ঘটনার খবর পেয়ে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার রমেশ বানোথ এবং ডেপুটি পুলিশ কমিশনার ডি দেবরাজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীরা শিবপ্রকাশের মাথার খুলি টুকরো টুকরো করে ফেলেছে এবং তাঁর মুখ ভয়াবহভাবে বিকৃত করে দিয়েছে।
বেঙ্গালুরুর পূর্ব বিভাগের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার রমেশ বানোথ জানিয়েছেন, “শিবপ্রকাশের বয়স ৪০ বছর। পূর্বে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধের ইতিহাস রয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, আমরা জানতে পেরেছি যে গাড়িতে থাকা কয়েকজন দুষ্কৃতী এসে তাঁকে হত্যা করেছে।”
সম্পত্তি বিবাদ ও বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ
তবে, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে সম্পত্তি বিবাদই মূল কারণ বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। নিহত শিবপ্রকাশের মা বিজয়লক্ষ্মী অভিযোগ করেছেন যে, বাসভরাজ-সহ অন্যান্যরা এই হত্যাকাণ্ডে মদত দিয়েছেন।
জানা গেছে, প্রায় তিন মাস আগে শিবপ্রকাশ বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনারকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। সেই চিঠিতে তিনি বাসভরাজ এবং তাঁর এক সহযোগীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। অভিযোগে শিবপ্রকাশ উল্লেখ করেছিলেন যে, মন্ত্রী, তাঁর সহযোগী এবং তাঁর ভাগ্নে মিলে তাঁর সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছেন। সম্পত্তি তাদের কাছে হস্তান্তর না করলে তাঁকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন।
শিবপ্রকাশ তাঁর চিঠিতে আরও লিখেছিলেন, “তারা আমার কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করেছে। আমার বিরুদ্ধে অবৈধ কার্যকলাপের মিথ্যা অভিযোগ এনে আইনি ঝামেলা তৈরি করার হুমকি দেয় তারা, যাতে আমি জমির উন্নয়ন বা জমি ব্যবহার করতে না পারি।” বাজার মূল্যের অনেক কম দামে তাদের কাছে শিবপ্রকাশের সম্পত্তি বিক্রি করার জন্য ক্রমাগত চাপ দিত বলেও অভিযোগ করেন তিনি। শিবপ্রকাশ নিজের এবং তাঁর পরিবারের সুরক্ষার কথা ভেবে তাৎক্ষণিকভাবে অনুরোধ করে লিখেছিলেন যে, তাঁর কিছু হলে বিধায়ক, জগদীশ, কিরণ এবং তাদের সহযোগীরা দায়ী থাকবেন।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত জারি রয়েছে। পুলিশ খুনের পেছনের আসল উদ্দেশ্য এবং অভিযুক্তদের ধরতে তৎপর হয়েছে। রাজনৈতিক মহলেও এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।