মালদহের মৃত বালকের দেহ কল্যাণী এইমস-এ, দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

মালদহের মানিকচকের রোজমেরি মিশনারী স্কুলের হোস্টেল থেকে উদ্ধার হওয়া অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র শ্রীকান্ত মণ্ডলের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় নতুন মোড়। কলকাতা হাইকোর্ট মৃত বালকের দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। বুধবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের একক বেঞ্চ কল্যাণী এইমস-এ দ্বিতীয়বার অটোপসি করার অনুমতি প্রদান করেন।

কল্যাণী এইমসে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত, কিন্তু…
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, কল্যাণী এইমস-এ মৃত বালকের দেহের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে। তবে, এইমস কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টকে জানিয়েছে যে, তারা কল্যাণী থেকে অটোপসি সার্জন পাঠাতে পারবে না। নতুন করে কল্যাণীতে ময়নাতদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। এইমস অধিকর্তা রিপোর্ট দিয়ে আদালতকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, যদি মৃতদেহ কল্যাণী নিয়ে আসা হয়, তাহলে তার দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করতে তাদের কোনো অসুবিধা নেই।

পরিবারের খরচে দেহ স্থানান্তর, কড়া নজরদারি
বালকের পরিবার যেহেতু নিজেদের খরচে দেহ কল্যাণী নিয়ে আসার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে, তাই বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ নির্দেশ দিয়েছেন যে, মানিকচক থানার তদন্তকারী অফিসার (IO) পরিবারের খরচে দেহ কল্যাণী নিয়ে আসতে পারবেন। বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যেই দেহ কল্যাণী এইমসে নিয়ে আসতে হবে।

তবে, ময়নাতদন্তের সময় তদন্তকারী অফিসার বা পরিবারের কেউ উপস্থিত থাকতে পারবেন না। পুরো ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়াটির ভিডিওগ্রাফি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।

দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রাথমিকভাবে তৈরি হওয়ার পর যদি আগের রিপোর্টের সঙ্গে কোনো তফাৎ থাকে, তাহলে সেটি সঙ্গে সঙ্গে তদন্তকারী অফিসারকে জানিয়ে দিতে হবে। এই মামলায় তদন্ত হস্তান্তর সহ অন্য যেসব আবেদন পরিবারের পক্ষ থেকে রয়েছে, সেগুলোর জন্য আগামী দিনে নতুন করে আবেদন করতে পারবে পরিবার।

রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে পরিবারের সন্দেহ
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ২ তারিখ রাতে মানিকচকের রোজমেরি মিশনারী স্কুলের হোস্টেল থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র শ্রীকান্ত মণ্ডলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করে, ছাত্রটি আত্মহত্যা করেছে। গত ২ তারিখ বুধবার রাতে দেহ উদ্ধার হওয়ার পর পরের দিন বৃহস্পতিবার প্রথম ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।

কিন্তু মৃত বালকের বাবার অভিযোগ, তাঁর ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। তিনি প্রথম ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং এই ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এরপরই তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন এবং দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের আবেদন জানান।

হাইকোর্টের এই নির্দেশ মামলার তদন্তে নতুন দিশা এনে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এই রহস্যজনক মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।