সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৩৪ ফুট উচ্চতা! তবুও উপচে পড়ছে মুকুটমনিপুরের জল, আশঙ্কায় মানুষজন

দক্ষিণবঙ্গ থেকে নিম্নচাপ সরে বিহারে চলে গেলেও, তার রেশ এখনও কাটেনি পশ্চিমের জেলাগুলি থেকে। গত কয়েকদিন ধরে পুরুলিয়াসহ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর জেরে কংসাবতী নদীর উপর অবস্থিত বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর জলাধারে জলের চাপ এতটাই বেড়েছে যে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ রেকর্ড পরিমাণে বাড়িয়ে ২৭,৫০০ কিউসেক করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিম মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় নতুন করে বন্যা পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সাধারণত, মুকুটমণিপুর জলাধারে কংসাবতী ও কুমারী নদী দিয়ে জল আসে। নিম্নচাপের প্রভাবে পুরুলিয়ায় ব্যাপক বৃষ্টি হওয়ায় গত কয়েকদিন ধরেই এই দুই নদী দিয়ে জলাধারে বিপুল পরিমাণ জল ঢুকতে শুরু করে। মুকুটমণিপুর জলাধারের সর্বোচ্চ জলধারণ ক্ষমতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৩৪ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত। কিন্তু লাগাতার বৃষ্টিতে জলাধারের জলস্তর গতকাল ৪৩৬.১৫ ফুট ছুঁয়ে ফেলে। জলাধারে জলের চাপ কমাতে তড়িঘড়ি সেচ দফতর জল ছাড়ার পরিমাণ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়।

জানা গেছে, এর আগে মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে ১৭,৫০০ কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে সেই পরিমাণ একলাফে ১০ হাজার কিউসেক বাড়িয়ে ২৭,৫০০ কিউসেক করা হয়েছে। সেচ দফতর সূত্রে খবর, ঝাড়খণ্ড ও সংলগ্ন পুরুলিয়াতে আরও বৃষ্টি হলে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও কিছুটা বৃদ্ধি করা হতে পারে।

এদিকে, মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে ক্রমশ জল ছাড়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ঘাটাল ও চন্দ্রকোণার নিচু এলাকাগুলি আবার জলমগ্ন হয়েছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে, তবে কংসাবতীর জলস্তর বাড়তে থাকায় জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে।