Smart Watch-কেনার আগে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন, জেনেনিন কী কী?

স্মার্টওয়াচ এখন শুধু সময় দেখার যন্ত্র নয়, এটি আধুনিক জীবনযাত্রার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। ফিটনেস ট্র্যাকিং, স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ, কল ও বার্তা গ্রহণ, এমনকি পেমেন্টের মাধ্যম হিসেবেও এর ব্যবহার বাড়ছে। বাজারে অসংখ্য মডেল ও বৈচিত্র্য থাকায় সঠিক স্মার্টওয়াচটি নির্বাচন করা বেশ কঠিন হতে পারে। তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখলে আপনি আপনার প্রয়োজন, বাজেট এবং দৈনন্দিন ব্যবহারের ধরণ অনুযায়ী সেরা স্মার্টওয়াচটি বেছে নিতে পারবেন। কেনার আগে রিভিউ এবং ইউটিউব ভিডিও দেখা আপনার সিদ্ধান্তকে আরও সুদৃঢ় করতে পারে।

স্মার্টওয়াচ কেনার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে আপনি আপনার চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ডিভাইস কিনতে পারবেন, আসুন জেনে নেওয়া যাক:


 

১. স্মার্টফোনের সাথে সামঞ্জস্যতা (Compatibility)

 

প্রথমেই নিশ্চিত হতে হবে যে, আপনার স্মার্টফোনের সঙ্গে নির্বাচিত স্মার্টওয়াচটি সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা। অনেক স্মার্টওয়াচ শুধুমাত্র অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস ডিভাইসের সঙ্গেই কাজ করে।

  • অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য: Samsung Galaxy Watch, Google Pixel Watch, Amazfit ইত্যাদি ভালো বিকল্প।
  • আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য: Apple Watch সবচেয়ে উপযোগী।

 

২. ডিসপ্লের মান এবং সাইজ

 

স্মার্টওয়াচে একটি ভালো ডিসপ্লে থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটিই আপনার প্রধান ইন্টারঅ্যাকশন মাধ্যম।

  • AMOLED ডিসপ্লে: উজ্জ্বল, রঙিন এবং স্পষ্ট; দিনের আলোতেও ভালো দেখা যায়।
  • LCD ডিসপ্লে: তুলনামূলকভাবে সস্তা তবে ব্যাটারি কম খরচ হয়।
  • স্ক্রিন সাইজ: আপনার হাতের মাপ অনুযায়ী স্ক্রিন সাইজ নির্বাচন করা উচিত, যাতে তা আরামদায়ক হয়।

 

৩. ব্যাটারি লাইফ

 

স্মার্টওয়াচের ব্যাটারি ব্যাকআপ অন্যতম প্রধান বিবেচ্য বিষয়।

  • Apple Watch বা Galaxy Watch-এর ব্যাটারি সাধারণত এক থেকে দুই দিন চলে।
  • Amazfit, Huawei বা Fitbit-এর কিছু মডেল ৭-১৪ দিন পর্যন্ত ব্যাটারি ব্যাকআপ দিতে পারে। আপনার ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী ব্যাটারি লাইফ বেছে নিন।

 

৪. হেলথ ও ফিটনেস ফিচার

 

যদি আপনি স্বাস্থ্য বা ফিটনেস ট্র্যাকিংয়ের জন্য স্মার্টওয়াচ কিনতে চান, তবে নিচের ফিচারগুলো থাকা জরুরি:

  • হার্ট রেট মনিটর
  • SpO2 (অক্সিজেন লেভেল) সেন্সর
  • স্লিপ ট্র্যাকার
  • স্ট্রেস মনিটর
  • নারী স্বাস্থ্য ট্র্যাকিং
  • জিপিএস: আউটডোর রান বা সাইক্লিংয়ের জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি।

 

৫. কল ও নোটিফিকেশন সাপোর্ট

 

অনেক স্মার্টওয়াচে সরাসরি কল রিসিভ, মেসেজ দেখা বা রিপ্লাই দেওয়ার সুবিধা থাকে।

  • এটি স্মার্টওয়াচের ব্লুটুথ ভার্সন বা এলটিই (LTE) ভার্সনের ওপর নির্ভর করে।
  • ব্লুটুথ কলিং সুবিধা আছে কিনা তা দেখে নিন, বিশেষত যদি আপনি ঘরে বা অফিসে মোবাইল পাশে রেখে কথা বলতে চান।

 

৬. অ্যাপ সাপোর্ট ও ইন্টারফেস

 

স্মার্টওয়াচের অপারেটিং সিস্টেম দেখে নিতে হবে।

  • অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস: ভালো সাপোর্টের জন্য Wear OS দেখুন।
  • iOS: WatchOS সাপোর্ট আছে কিনা নিশ্চিত হয়ে নিন।

 

৭. ডিজাইন ও স্ট্র্যাপ

 

যেহেতু স্মার্টওয়াচ আপনি প্রতিদিন পরবেন, তাই এর ডিজাইন এবং আরামদায়ক স্ট্র্যাপ থাকা জরুরি।

  • পরিবর্তনযোগ্য স্ট্র্যাপ সুবিধা থাকলে ভালো।
  • ওয়াচের ওজন ও গঠনের ওপরও নজর দিন, যাতে তা পরতে আরামদায়ক হয়।

 

৮. ওয়াটারপ্রুফ বা ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স

 

আপনি যদি ঘামান, সাঁতার কাটেন বা বৃষ্টিতে ভেজেন, তবে স্মার্টওয়াচে উপযুক্ত ওয়াটারপ্রুফ রেটিং থাকা আবশ্যক।

  • IP68 বা 5ATM রেটিং থাকলে স্মার্টওয়াচ পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

 

৯. দাম ও ব্র্যান্ড রেপুটেশন

 

আপনার বাজেটের মধ্যে সেরা ফিচারসমৃদ্ধ স্মার্টওয়াচ খুঁজুন। নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ডের পণ্য বেছে নেওয়া ভালো।


 

১০. সফটওয়্যার আপডেট ও সার্ভিস ওয়ারেন্টি

 

ভবিষ্যতে নতুন ফিচার আপডেট পেতে চাইলে ব্র্যান্ডটির সফটওয়্যার সাপোর্ট কেমন, তা জেনে নিন। এছাড়াও, আপনার এলাকায় অফিসিয়াল সার্ভিস সেন্টার আছে কিনা, তা দেখে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে স্মার্টওয়াচ কিনলে আপনি আপনার প্রয়োজন ও বাজেট অনুযায়ী সেরা ডিভাইসটি বেছে নিতে পারবেন।