ভাঙড়ে তৃণমূলের ‘পুরস্কার-শাস্তি’ ফরমান, প্রতিবাদ মিছিলে লোক ভরালে মিলবে সুবিধা

ভাঙড়ে সম্প্রতি রাজ্জাক খান খুনের প্রতিবাদ মিছিলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের অন্দরে এক বিতর্কিত ‘ফরমান’ ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূলের জেলা কর্মাধ্যক্ষ বাহারুল ইসলাম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এই প্রতিবাদ মিছিলে বাধ্যতামূলকভাবে লোক ভরাতেই হবে। যে বুথ থেকে যত বেশি লোক আসবে, তাদের জন্য থাকছে ‘পুরস্কার’, আর যারা ভিড়ের ছবি তুলে পাঠাতে ব্যর্থ হবে, তাদের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
‘বৃষ্টি হোক বা না হোক, লোক ভরাতেই হবে’
বাহারুল ইসলামের এই নির্দেশিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। তার কথায়, “রাজ্জাক খানের খুনের প্রতিবাদ মিছিলে ভরাতেই হবে লোক। যে বুথ থেকে যত লোক, তাদের আলাদা করে পুরস্কার ঘোষণা।” তিনি আরও বলেন, “বৃষ্টি হোক বা না হোক, প্রতিবাদ মিছিলে লোক ভরাতেই হবে।” এই নির্দেশনার মাধ্যমে তৃণমূল কর্মীরা কার্যত একটি অলিখিত হুমকির মুখে পড়েছেন। মিছিলে ভিড়ের ছবি তুলে না পাঠালে তাদের সরকারি বা দলীয় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হতে পারে বলে পরোক্ষভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এই তৃণমূল নেতা।
রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক
এই ঘটনা তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এক নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিরোধী দলগুলি এই ফরমানকে ‘গণতন্ত্রের পরিপন্থী’ এবং ‘জোর করে লোক জমানোর চেষ্টা’ বলে আখ্যা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, রাজনৈতিক প্রতিবাদ মিছিলে কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ না থাকলে কেন এমন পুরস্কার বা শাস্তির ভয় দেখানো হচ্ছে? এই ধরনের নির্দেশিকা দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন।
ভাঙড়ের এই ঘটনা ফের একবার তৃণমূলের সাংগঠনিক কৌশল এবং দলের অন্দরের চাপানো নির্দেশিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।
মহাকাশ থেকে ঘরে ফিরলেন ভারতের গর্ব শুভাংশু শুক্লা: পরিবারের চোখে আনন্দের অশ্রু, দেশজুড়ে উৎসব
সান ডিয়েগো/লখনউ, ১৫ই জুলাই, ২০২৫: ১৮ দিনের মহাজাগতিক অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করে অবশেষে পৃথিবীর বুকে ফিরে এলেন ভারতের প্রথম আইএসএস মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা। ভারতীয় সময় অনুযায়ী, মঙ্গলবার দুপুর ৩টে বেজে ১ মিনিটে শুভাংশু এবং তার সহযাত্রীদের বহনকারী মহাকাশযান আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো উপকূলে, প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে অবতরণ করে। এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনের মুহূর্তে ছেলের নিরাপদ অবতরণ সরাসরি প্রত্যক্ষ করছিলেন শুভাংশুর পরিবার, আর তাদের চোখে ছিল আনন্দ ও গর্বের অশ্রু।
সফল মিশন, আবেগঘন মুহূর্ত
অবতরণের সময় আমেরিকায় রাত হলেও, আগেই সেখানে নৌকা ও জাহাজ মোতায়েন রাখা হয়েছিল উদ্ধারকার্যের জন্য। শুভাংশুদের ক্যাপসুলটি জল ছুঁতেই দ্রুত উদ্ধারকার্য শুরু হয় এবং একে একে সকলকে ক্যাপসুল থেকে বের করে আনা হয়।
অন্যদিকে, লখনউতে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে শামিল হয়ে শুভাংশুর পরিবার সরাসরি ছেলের মহাকাশযান অবতরণের দৃশ্য দেখছিলেন। মহাকাশযানের প্যারাশ্যুটটি চোখে পড়তেই শুভাংশুর বাবার চোখ জলে ভরে যায়। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থেকে মহাকাশযানটি সফলভাবে অবতরণ করার পর পরিবারের সদস্যরা কেক কেটে উদযাপন করেন, যা তাদের আনন্দ ও স্বস্তির প্রতিফলন ছিল।
“ওঁর মিশন সম্পূর্ণ হয়েছে, ঈশ্বর এবং গোটা দেশবাসীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ”
ছেলের সফল প্রত্যাবর্তনের পর এক আবেগঘন প্রতিক্রিয়ায় শুভাংশুর বাবা বলেন, “ওঁর মিশন সম্পূর্ণ হয়েছে, ঈশ্বর এবং গোটা দেশবাসীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ।” এই সরল বাক্যগুলি যেন শুভাংশুর কঠোর পরিশ্রম, ত্যাগ এবং দেশের জন্য তার এই ঐতিহাসিক অর্জনের গুরুত্বকে তুলে ধরে।
ভারতের মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিগন্ত
সব মিলিয়ে ১৮ দিন মহাকাশে কাটিয়ে পৃথিবীতে ফেরা শুভাংশু শুক্লার এই অভিযান ভারতের মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। আইএসএস-এ তার অভিজ্ঞতা এবং সেখানে পরিচালিত গবেষণাগুলি ভবিষ্যতে ভারতের গগনযান-সহ অন্যান্য মহাকাশ অভিযানগুলির জন্য অত্যন্ত মূল্যবান তথ্য ও অনুপ্রেরণা যোগাবে। শুভাংশুর এই সাফল্য শুধু তার পরিবারের জন্য নয়, সমগ্র দেশের জন্য এক বিশাল গর্বের বিষয়, যা তরুণ প্রজন্মকে মহাকাশ গবেষণায় আগ্রহী করে তুলবে।