জামাই আদরের নামে পৈশাচিক অত্যাচার, শ্বশুরবাড়িতে জামাইকে বেধড়ক মার, শিউরে উঠল নেটপাড়া!

জামাইকে কব্জি ডুবিয়ে খাওয়াদাওয়ার নিমন্ত্রণ করেছিলেন শ্বশুর। জামাই আদর পাওয়ার আশায় সেজেগুজে তড়িঘড়ি শ্বশুরবাড়ি পৌঁছে গিয়েছিলেন জামাই মহম্মদ ইয়ামিন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরেই শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরোলেন ছেঁড়া ফাটা জামা পরে, যা দেখে স্তম্ভিত স্থানীয়রা। জানা গেছে, শ্বশুরবাড়িতে পা রাখা মাত্রই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন তিনি। শ্বশুর ও স্ত্রীর আত্মীয়রা তাকে বেধড়ক মারধর করেন, যার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই আঁতকে উঠেছেন নেটিজেনরা।
কী ঘটেছিল সেদিন?
উত্তরপ্রদেশের পিলিভিট জেলার আমারিয়া পুলিশ স্টেশনের অন্তর্গত বরা মাজলিয়া গ্রামে ঘটেছে এই নারকীয় ঘটনা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, আহত যুবকের নাম মহম্মদ ইয়ামিন। ভিডিওতে দেখা গেছে, মৌলানার মতো পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি ইয়ামিনের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন এবং বেল্ট দিয়ে একের পর এক আঘাত করছেন ইয়ামিনকে। বেল্ট দিয়ে মারতে মারতে ইয়ামিনকে মাটিতে ফেলে দেন। এরপর ইয়ামিনের গলায় পা দিয়ে চেপে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি, যা দেখে স্থানীয়রা ‘তালিবান ঘরানার অত্যাচার’ বলে বর্ণনা করেছেন। সেই সময় ইয়ামিনের দমবন্ধ হয়ে মৃত্যুর আশঙ্কাও ছিল।
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, সেই মারধরের সময় আরও দু’জন যুবক ঘটনাস্থলে এসে মারধরকারী ব্যক্তির কাছ থেকে বেল্টটি চান, যেন তারাই ইয়ামিনকে বেল্ট দিয়ে মারধর করবেন। তবে বেল্টটি তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। কিন্তু ওই দু’জন যুবকও ইয়ামিনকে একের পর এক চড়, লাথি, ঘুষি, থাপ্পড় মারতে থাকেন। প্রাণপণে চিৎকার করতে থাকেন ইয়ামিন, বারবার তাঁদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চান এবং যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন। তবুও থামেনি অত্যাচার।
কেন এই পৈশাচিক কাণ্ড?
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, যিনি বেল্ট দিয়ে এবং গলায় পা চেপে অত্যাচার করছিলেন, তিনি সম্পর্কে ইয়ামিনের শ্বশুর। বাকি দু’জন ইয়ামিনের শ্বশুরবাড়িরই সদস্য। জানা গেছে, ইয়ামিন মাদকাসক্ত ছিলেন। নিত্যদিন মাদকের নেশা করাকে কেন্দ্র করে স্ত্রীর সঙ্গে তার ঝামেলা হত।
সংসারে অশান্তির বিষয়টি ইয়ামিনের স্ত্রী তার বাড়িতে জানিয়েছিলেন এবং এও জানিয়েছিলেন যে, আপত্তি থাকা সত্ত্বেও ইয়ামিন মাদকের নেশা ছাড়ছেন না। এই অভিযোগের পরেই ইয়ামিনকে বাড়িতে ‘নিমন্ত্রণ’ করেছিলেন শ্বশুর। কিন্তু সেই নিমন্ত্রণ যে আদরের নয়, ভয়ঙ্কর এক শাস্তির ফাঁদ ছিল, তা ইয়ামিন শ্বশুরবাড়িতে পা রাখার পরই হাড়ে হাড়ে টের পান।
পুলিশের পদক্ষেপ, তবে অভিযোগ নেই
ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করেছে। অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করেছে তারা। তবে অবাক করার মতো বিষয় হলো, ইয়ামিনের তরফে এখনও পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ না থাকায় পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেনি, তবে ঘটনার তদন্ত জারি রেখেছে। নেটিজেনরা এই পৈশাচিক নির্যাতনের নমুনা দেখে শিউরে উঠেছেন এবং পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ করার জন্য আর্জি জানিয়েছেন।