“বাংলায় জল ছেড়ে দিয়ে বন্যা করে খালাস”-ফের DVC-কে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

টানা বৃষ্টি এবং ডিভিসির জল ছাড়ার ফলে রাজ্যের বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হওয়ায় ডিভিসির ভূমিকার ওপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি ডিভিসিকে সরাসরি নিশানা করে বলেছেন, “কেউ নিজেকে বাঁচানোর জন্য জল ছেড়ে দিয়ে খালাস হয়ে যাচ্ছেন। নিজেদের যে দায়বদ্ধতা, ১৪ বছর ধরে লড়াই করছি, কিন্তু কোনও ফল পাওয়া যাচ্ছে না। আমি নিজে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। নীতি আয়োগের বৈঠকে আলোচনা করেছি। জনগণের যে ক্ষতি হচ্ছে… বাংলায় শুধু জল ছেড়ে দিয়ে বন্যা করে দিয়ে খালাস।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “অতি বৃষ্টির ফলে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। কিছু অঞ্চল ভেসেছে। বাংলা চিরকালই ভোগে… বার বার বলা সত্ত্বেও, ডিভিসি বলুন, পাঞ্চেত বলুন, মাইথন বলুন, এরা কেউ আমাদের কথা শুনছে না।” তিনি জানান, গত ১৮ জুন থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ২৭ হাজার লক্ষ কিউবিক মিটার জল ছাড়া হয়েছে, যা “সাঙ্ঘাতিক”। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, এই বিপুল পরিমাণ জল ছেড়ে “পুরো ডুবিয়ে দিয়েছে কয়েকটা জেলা।” তিনি আগেও ডিভিসির জল ছাড়াকে ‘ম্যান-মেড বন্যা’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও জানান, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান দ্রুত রূপায়ণের চেষ্টা করা হচ্ছে। প্লাবিত এলাকায় নজরদারি চালানোর জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ত্রাণ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যতদিন পর্যন্ত তাঁরা বাড়ি ফিরতে না পারবেন রিলিফ দিন। যতদিন না স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন, রিলিফ দিতে হবে।” পর্যাপ্ত ওষুধ পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি বর্ষায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া থেকে বাঁচতে সতর্কতামূলক প্রচার চালানোরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, টানা বৃষ্টির জেরে এবারের বর্ষাতেও দামোদর নদের তীরবর্তী এলাকার জন্য বিপদ আসন্ন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, আজ, মঙ্গলবার সকাল থেকে পাঞ্চেত ও মাইথন জলাধার থেকে জল ছাড়তে শুরু করেছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি)। মোট প্রায় ৪৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে, যার মধ্যে পাঞ্চেত থেকে প্রায় ৩৬ হাজার কিউসেক এবং মাইথন থেকে প্রায় ৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে।