নিজের নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ বাবার -“সাতটি বিয়ে গুণধরের” বিচার চাই ?

মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত একটি গ্রামে ঘটে গেল এক পৈশাচিক ঘটনা। এক ১৪ বছর বয়সী নাবালিকা কিশোরী তার নিজের বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অভিযোগ এনেছে। নির্যাতিতা নিজেই সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে, যার ভিত্তিতে অভিযুক্ত বাবা-কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

সাহসিকতার সঙ্গে মুখ খুলল কিশোরী
মঙ্গলবার ধৃতকে চাঁচল মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছে। একইসঙ্গে, নির্যাতিতা নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং বিচারকের সামনে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার জন্য তাকেও আদালতে পেশ করা হয়।

নাবালিকা তার জবানবন্দিতে জানিয়েছে, “এর আগেও বাবা আমার সঙ্গে খারাপ কাজ করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আমার বাধায় তা করতে পারেনি। রবিবার দুপুরে আমি ঘরে ঘুমিয়েছিলাম। মা কাজে বেরিয়েছিল। সেই সময় বাবা আমাদের ঘরে ঢুকে পড়ে। হঠাৎ আমার মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে দেয়। তারপর আমাকে ধর্ষণ করে। বাবার প্রতি ঘেন্নায় আমার কথা বেরোচ্ছিল না। মা কাজ থেকে ফেরার পর সব কথা খুলে বলি। পরিবারের অসম্মানের কথা ভেবে মা প্রথমে চুপ করে ছিল, কিন্তু পরে মা আমাকে গোটা ঘটনা জানিয়ে থানায় অভিযোগ জানাতে বলে। মায়ের সঙ্গে কথা বলেই আমি গতকাল সন্ধেয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। পুলিশ বাবাকে গ্রেফতার করেছে। আমি চাই, এই কাজের জন্য বাবার কঠোর শাস্তি হোক।”

এক ভয়ঙ্কর বাবা: সাত বিয়ের রহস্য এবং নির্মমতা
ধৃতের বয়স ৩৬ বছর এবং সে পেশায় দিনমজুর। কিন্তু তার ব্যক্তিগত জীবন আরও বেশি চমকপ্রদ ও বিতর্কিত। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ব্যক্তির একটি বা দুটি নয়, মোট সাতটি বিয়ে রয়েছে এবং সে সাত স্ত্রীকে নিয়েই থাকে। দিনমজুরির সামান্য রোজগারে এতজনের ভরণপোষণ হয় না, তাই তার স্ত্রীরাও শ্রমিকের কাজ করতে বাধ্য হন। এই দ্বিতীয় স্ত্রীর ১৪ বছর বয়সী মেয়েকেই সে তার লালসার শিকার বানিয়েছে বলে অভিযোগ।

নির্যাতিতার মায়ের বক্তব্য, “ও আমার স্বামী হলেও যে কাজ করেছে তার জন্য নরকেও ওর স্থান হবে না। নিজের মেয়ের এত বড় সর্বনাশ করতে ওর বুক একবারও কাঁপল না? আমি ওর কঠোর শাস্তি দাবি করছি। ওর যেন ফাঁসি হয়। আইনের উপর আমার সেই আস্থা রয়েছে।”

পুলিশি তদন্ত: পারিবারিক বিবাদ নাকি নিছকই পৈশাচিকতা?
চাঁচল মহকুমা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ধৃতের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ধৃতকে আজ চাঁচল মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়েছে এবং নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষাও করানো হয়েছে।

হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত শুরু করেছে। যেহেতু অভিযুক্তের সাতটি বিয়ে, তাই এই ঘটনার সঙ্গে স্ত্রীদের মধ্যে কোনও বিবাদ বা পারিবারিক কোনও চক্রান্ত রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক দৃষ্টিতে এটি একটি নৃশংস যৌন নির্যাতনের ঘটনাই বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এই জঘন্য অপরাধের জন্য অভিযুক্তের কঠোরতম শাস্তির দাবি তুলেছে এলাকাবাসী ও বিভিন্ন মহল।