বিহারের বেতিয়ায় চরম অবক্ষয়, ৫ সন্তান ফেলে প্রেমিকের সঙ্গে পালালেন জননী, প্রশ্নের মুখে পারিবারিক মূল্যবোধ

বিহারের পশ্চিম চম্পারণ জেলার বেতিয়া মহকুমার নারকটিয়াগঞ্জের শিকারপুর থানা এলাকায় সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছে। পাঁচ সন্তানকে ফেলে এক গৃহবধূ তার প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গেছেন, যা পরিবার, সম্পর্ক এবং দায়িত্ববোধের চরম অবক্ষয়ের এক করুণ উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি: সঙ্গে শুধু কোলের শিশু

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, প্রায় ২০ বছরের দাম্পত্য জীবন ছিল ওই দম্পতির। তাদের পাঁচ সন্তান রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ একদিন এই সম্পর্কের বাঁধন ছিঁড়ে গৃহবধূ তার প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান। পালানোর সময় তিনি কেবল কোলের ছোট মেয়েটিকে সঙ্গে নিয়ে গেছেন।

ঘটনার দিন তার স্বামী, যিনি পাঞ্জাবে শ্রমিকের কাজ করেন, ফোনে খবর পেয়ে তড়িঘড়ি গ্রামে ফিরে আসেন। বাড়িতে এসে তিনি দেখেন তার স্ত্রী নেই, এবং বাকি সন্তানরা কান্নায় ভেঙে পড়েছে। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন যে, তার স্ত্রী গ্রামেরই এক যুবক তুমান আনসারির সঙ্গে পালিয়ে গেছেন।

সন্তানদের বয়ানে উন্মোচিত সত্য

স্বামীর বক্তব্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরেই তার স্ত্রীর সঙ্গে তুমান আনসারির সম্পর্ক ছিল। তিনি নিজেও কিছুটা সন্দেহ করতেন, কিন্তু এমন চরম পরিণতি হবে, তা তিনি ভাবতেও পারেননি। ঘটনার দিন বাড়ি ফিরে ছোট মেয়ের সঙ্গে কথা হলে মেয়ে বাবাকে জানায়, “মা বাইকে করে চলে গিয়েছে, সঙ্গে তুমান চাচা ছিল।” তখনই পুরো বিষয়টি তার কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়।

হতবাক স্বামী এখন শিকারপুর থানায় বাকি পাঁচ সন্তানকে নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন এবং স্ত্রী ও কোলের মেয়ের সন্ধানে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। তার অভিযোগ, তুমান আনসারি ও তার পরিবার মিলে পরিকল্পিতভাবে তার স্ত্রীকে ফাঁসিয়েছে এবং সন্তানকে নিয়ে পালাতে সাহায্য করেছে।

পুলিশি তদন্ত শুরু, সামাজিক অস্থিরতার ইঙ্গিত

পুলিশ অভিযোগ পেয়েই তৎক্ষণাৎ তদন্ত শুরু করেছে। শিকারপুর থানার তরফে জানানো হয়েছে, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে এবং নিখোঁজ মহিলাকে খুঁজে বের করতে একটি বিশেষ অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়েছে।

এই ঘটনা শুধু একটি পরিবারকেই ধ্বংস করেনি, প্রশ্নের মুখে ফেলেছে সমাজের বর্তমান অবস্থাকে। দিন দিন এমন ঘটনা বেড়েই চলেছে, যেখানে ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা ও আবেগ পারিবারিক বন্ধন, সন্তানের ভবিষ্যৎ ও সামাজিক মূল্যবোধের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। সম্প্রতি বিহারের জামুই জেলাতেও এমনই একটি ঘটনা ঘটেছিল, যেখানে এক স্ত্রী নিজের স্বামী ও সন্তানকে ছেড়ে ভাগ্নের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং সেই ঘটনাও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।

এই ঘটনায় বাকি পাঁচ শিশুর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাদের চোখে এখন শুধুই ভয়, হতাশা আর এক অনির্দিষ্ট প্রতীক্ষা। স্বামী এখনও থানায় বসে একটাই কথা বলে চলেছেন, “আমি তো শুধু পরিবারের জন্য পরিশ্রম করেছি, তাহলে কেন এমন হলো?” পুলিশ জানিয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব নিখোঁজদের খুঁজে বের করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।