ডিজিটাল বাংলার জয়যাত্রা, বাংলা সহায়ক কেন্দ্রের ১০০০ কোটি টাকার ই-লেনদেন, মুখ্যমন্ত্রীর উচ্ছ্বাস

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের প্রতি বাংলার মানুষের ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা এবং সরকারি পরিষেবা প্রদানে তার অভূতপূর্ব সাফল্য আবারও প্রমাণিত হলো। বাংলা সহায়ক কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে ই-ওয়ালেট ব্যবহার করে মাত্র অল্প সময়ের মধ্যেই ১০০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে, যা রাজ্যের ডিজিটাল অগ্রগতির এক নতুন মাইলফলক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে এই তথ্য প্রকাশ করে এই উদ্যোগকে ‘ডিজিটাল বাংলা ইন অ্যাকশন’-এর প্রকৃত উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি: দক্ষতা ও স্বচ্ছতার প্রতীক
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সাফল্যকে জনপরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের ডিজিটাল মডেলের দক্ষতা ও স্বচ্ছতার এক বড় প্রমাণ হিসেবে দেখছেন। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। যা জনপরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের ডিজিটাল মডেলের দক্ষতা ও স্বচ্ছতাকে তুলে ধরে। এক কথায় এই উদ্যোগ ‘ডিজিটাল বাংলা ইন অ্যাকশন’-এর প্রকৃত উদাহরণ।”
বাংলা সহায়ক কেন্দ্র: এক ছাদের নিচে ২৬০ পরিষেবা
২০২০ সালের অক্টোবরে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মকে সামনে রেখে কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা সহায়ক কেন্দ্র চালু করেন। এই প্রকল্পটি জাতীয় ই-গভর্নেন্স প্ল্যানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এর এক বছর পর, এই প্রকল্প পরিচালনার জন্য একটি প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট ইউনিটও গঠন করা হয়েছিল।
বর্তমানে রাজ্যজুড়ে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থেকে পুরসভা, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, জেলাশাসকের দফতর থেকে বিডিও অফিস পর্যন্ত মোট ৩,৫৬১টি বাংলা সহায়ক কেন্দ্র চালু রয়েছে। এই কেন্দ্রগুলিতে সাধারণ মানুষ বিনা পয়সায় বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা গ্রহণ করতে পারেন। পুরসভার কর সহ বিভিন্ন সরকারি কর পরিশোধ, জাতিগত শংসাপত্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং হাজারো সরকারি প্রকল্পে অনলাইন আবেদন জানানোর সুযোগ রয়েছে। ২৬০টি জনপরিষেবা এবং ৯৭টি ই-ওয়ালেট পরিষেবার পাশাপাশি, সমস্ত সরকারি প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য জানার সুযোগও রয়েছে বাংলা সহায়ক কেন্দ্রগুলিতে।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পোস্টে লিখেছেন, বাংলা সহায়ক কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন স্কলারশিপ, বিভিন্ন সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্য ও আবাসন পরিষেবা সহ নানা ধরনের সরকারি দফতর পরিষেবা প্রদান করা হয়ে থাকে—সবটাই হয় ডিজিটাল পরিকাঠামোর মাধ্যমে, নির্বিঘ্নে, যা নাগরিকদের ক্ষমতায়ন করছে।
অপারেটর ও সহায়ক দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা
এই বিপুল সাফল্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রী বাংলা সহায়ক কেন্দ্রগুলির কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “অপারেটর এবং তাঁদের সহায়ক দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই এই সাফল্য এসেছে।” নবান্নের মতে, সরকারি পরিষেবায় এটি নিঃসন্দেহে এক বড় সাফল্যের নজির, যা রাজ্যের ডিজিটাল রূপান্তরের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এই অর্জন বাংলার প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ডিজিটাল বিপ্লবের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করল।