আইআইএম কাণ্ডের রেশ, রাজন্যার ‘AI-বিকৃত’ ছবির অভিযোগ, উত্তপ্ত তৃণমূল ছাত্র রাজনীতি

কসবার ল’কলেজে গণধর্ষণের অভিযোগে ধৃত মনোজিৎ মিশ্রকে ঘিরে যখন একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে, ঠিক তখনই বিস্ফোরক অভিযোগ এনে শিরোনামে এলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাসপেন্ডেড নেত্রী রাজন্যা হালদার। এবার তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করে তার সেমি-ন্যুড ছবি বিকৃত করে ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন। দীর্ঘ দ্বিধার পর অবশেষে তিনি সোনারপুর থানা ও লালবাজার সাইবার ক্রাইম বিভাগে এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

‘দাদাদের’ বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

রাজন্যার অভিযোগের তীর সরাসরি শাসক দলের ঘনিষ্ঠ ‘দাদাদের’ দিকে। তিনি দাবি করেছেন, এই ‘দাদারা’ AI প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার ব্যক্তিগত ছবি বিকৃত করে জুনিয়রদের মোবাইলে ছড়িয়ে দিয়েছেন। এই ঘটনাকে তিনি ‘একজন মনোজিৎ মিশ্র নয়, আরও অনেক মনোজিৎ তৃণমূলের শাসক দলে রয়েছে’ বলে মন্তব্য করে দলের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির দিকেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এর আগে রাজন্যা এই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেও তা পুলিশে জানাননি। তখন তিনি দাবি করেছিলেন, তিনি দলের উপর আস্থা রাখেন এবং চেয়েছিলেন দলই এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিক, যা আখেরে দলেরই শুদ্ধিকরণ করবে। তবে বারবার তার বিকৃত ছবি মোবাইলে ছড়িয়ে পড়ার পর এবং বিতর্কের মুখে তিনি শেষ পর্যন্ত পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। ইমেলের মাধ্যমে তিনি এই অভিযোগ দায়ের করেছেন।

পুলিশি তদন্তের দাবি ও সন্দেহের তালিকা

রাজন্যা হালদার জানিয়েছেন, কয়েকটি নির্দিষ্ট জায়গায় বারবার তার এই বিকৃত ছবি ছড়িয়ে পড়ছে। কে বা কারা এই কাজের পিছনে রয়েছে, সে বিষয়ে তিনি কয়েকজনকে সন্দেহ করছেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করলে তিনি তাদের পরিচয় সামনে আনবেন বলে জানিয়েছেন।

এই ছবি ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়া এবং রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে এই ছবিগুলির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং দাবি করেছেন যে, পুলিশ যেন দ্রুত তদন্ত করে আসল তথ্য সামনে আনে।

রাজনৈতিক মহলে তোলপাড়

কসবা ল’কলেজ ধর্ষণ কাণ্ডের অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি যখন শিক্ষাঙ্গনে নারী সুরক্ষার প্রশ্ন তুলেছে, তখন রাজন্যার এই নতুন অভিযোগ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং ডিজিটাল যুগে নারী নিগ্রহের নতুন মাত্রা উন্মোচন করল। এই ঘটনা তৃণমূলের ছাত্র রাজনীতিতে নতুন করে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে এবং দল এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়, সেদিকেই এখন সকলের নজর। পুলিশের তদন্তে কী তথ্য উঠে আসে, তার উপরই এই ঘটনার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।