বাংলাদেশি সন্দেহে আটক ৭৫০ জন শ্রমিক, ভেরিফিকেশন করেছে রাজ্য! বিতর্কের মাঝে জানাল পুলিশ

ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক করার ঘটনা বাড়ছে। বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই একাধিক রাজ্য থেকে এমন অভিযোগ উঠে এসেছে। এই পরিস্থিতি ঘিরে মামলা গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। এর মধ্যেই ভবানী ভবনের তরফে রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে আটক হওয়া ৭৫০ জন পরিযায়ী শ্রমিকের পরিচয়পত্র ও প্রমাণপত্র খতিয়ে দেখা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক আটক হওয়ার খবর পাওয়া মাত্রই সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বাংলার পুলিশ। কিন্তু অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই সেই রাজ্যের পুলিশ সহযোগিতা করতে নারাজ। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে সরাসরি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি, রাজ্যের লেবার বোর্ড, কর্মসাথী প্রকল্প, স্থানীয় বিধায়ক এবং আটক শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ।
ভবানী ভবনের এক পুলিশ কর্তা টাইমস অফ ইন্ডিয়া-কে জানিয়েছেন,”যখনই কোনও শ্রমিক আটক হওয়ার খবর আসে, আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের কাছ থেকে নিশ্চিত করি। তারপর তাদের অনুরোধ জানাই, পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে সেই শ্রমিকের ঠিকানা এবং পরিচয় নথিভুক্তভাবে যাচাই করে নিতে।”
পরিচয় যাচাইয়ের জন্য রাজ্য পুলিশ এখন সংগ্রহ করছে আটক শ্রমিকদের জন্মসার্টিফিকেট, জমির দলিল, বাবা-মা বা দাদু-দিদার ভোটার কার্ডের প্রতিলিপি। পরে সেই নথি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের জেলা প্রশাসনের কাছে, যাতে ওই ব্যক্তির ভারতীয় নাগরিকত্ব সম্পর্কে সন্দেহ দূর করা যায়।
তবে এই প্রক্রিয়ার মাঝেও গুরুতর অভিযোগ উঠছে—ভিনরাজ্যে আটক বহু শ্রমিকের ফোন বাজেয়াপ্ত করে নেওয়া হচ্ছে। ফলে তাঁরা অনেক সময় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। এতে একদিকে যেমন পরিবারের উদ্বেগ বাড়ছে, অন্যদিকে বিলম্ব হচ্ছে পরিচয় যাচাইয়ের প্রক্রিয়াতেও।
এই ঘটনা শুধু মানবিক নয়, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দিক থেকেও উদ্বেগজনক। এখন দেখার, আদালতের হস্তক্ষেপে এর কোনও স্থায়ী সমাধান হয় কি না।