বিমান দুর্ঘটনার ভয়াবহ মুহূর্ত প্রকাশ্যে, ককপিটে পাইলটদের শেষ কি কথা হয়েছিল, তুলে ধরল AAIB-র রিপোর্ট

১২ জুন, আহমেদাবাদ বিমানবন্দর। রানওয়ে ছেড়ে আকাশে উড়তে না উড়তেই মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং ড্রিমলাইনার বিমান। চোখের সামনে ভেঙে পড়া সেই দৃশ্য শিউরে তুলেছিল গোটা দেশকে। অবশেষে প্রকাশ্যে এল সেই মর্মান্তিক ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট। দুর্ঘটনার পেছনে ইঞ্জিন সংক্রান্ত গুরুতর সমস্যার কথাই জানিয়েছে বিমান দুর্ঘটনা তদন্তকারী সংস্থা, এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (AAIB)।

এই রিপোর্টে শুধু যান্ত্রিক ত্রুটি নয়, সামনে এসেছে বিমানের ককপিটে থাকা দুই পাইলটের শেষ মুহূর্তের কথোপকথনও। ককপিট ভয়েস রেকর্ডার অনুযায়ী, ক্যাপ্টেন সুমিত সাবারওয়াল এবং ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দরের মধ্যে এক পাইলট প্রশ্ন করেন, “ফুয়েল কাট অফ করলে কেন?” উত্তরে অপরজন বলেন, “আমি তো করিনি।”
এই সংলাপ ইঙ্গিত দেয়, ফুয়েল সাপ্লাইয়ের সুইচ হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিমানটি টেক অফ করার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ইঞ্জিনের ফুয়েল সুইচ CUTOFF অবস্থায় চলে যায়। যার ফলে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায় এবং বিমানটি হঠাৎ করে নেমে আসে। ককপিটের এই সংক্ষিপ্ত কথোপকথন ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঠিক আগমুহূর্তের।

ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় বিমানটি ভেঙে পড়ে আহমেদাবাদের বিজে মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের ছাদে। ঘটনায় কলেজের একাধিক ছাত্র-ছাত্রীর মৃত্যু হয় এবং আহত হন অনেকেই। বিমানে থাকা যাত্রীদের মধ্যে কেবল একজন বেঁচে যান। বাকিদের প্রাণ হারাতে হয় মর্মান্তিক পরিস্থিতিতে।

ইতিমধ্যেই এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—এই দুর্ঘটনার নেপথ্যে শুধুই যান্ত্রিক ত্রুটি, নাকি রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার আরও গভীর ফাঁকফোকর রয়ে গিয়েছে? প্রাথমিক রিপোর্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে, বিষয়টি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং দীর্ঘদিনের গাফিলতির ফলাফল।