“খেলতে গিয়ে গলায় ফাঁস”-৯ বছরের শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুতে হতবাক সকলে, শোকে পরিবার

খেলার ছলেই নিভে গেল এক ফুটফুটে শিশুর প্রাণ! মালদার ভুতনি থানার দক্ষিণ চন্ডিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্গারামটোলা এলাকায় এক মর্মান্তিক ঘটনায় ৯ বছরের এক শিশুর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। খেলতে গিয়ে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটায় গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া এবং তৈরি হয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য।

মৃত শিশুটির নাম আদিত্য ঘোষ (৯)। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে আদিত্য তার ছোট ভাইয়ের সঙ্গে তাদের নতুন নির্মীয়মাণ বাড়িতে খেলছিল। হঠাৎই মা ঘরে এসে দেখেন, আদিত্য গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। এই দৃশ্য দেখে সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে ভুতনি দিয়ারা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে; কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

পরিবারের সদস্যরা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, এত কম বয়সী একটি শিশু আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তাদের ধারণা, খেলতে খেলতে অসাবধানতাবশত দড়ি গলায় পেঁচিয়েই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। তবে এই ঘটনার পেছনে কোনো অজানা রহস্য লুকিয়ে আছে কি না, তা নিয়ে গ্রামে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে, নতুন বাড়ির নির্মাণস্থলে নিরাপত্তার ঘাটতি ছিল। নির্মাণকাজের জন্য ব্যবহৃত কোনো দড়ি বা ফাঁদের কারণে আদিত্যের এমন পরিণতি হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে।

খবর পেয়ে ভুতনি থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তারা মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে। একই সঙ্গে পরিবার এবং স্থানীয়দের বয়ানের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ এই ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা বলেই মনে করছে। তবে আদিত্যের মৃত্যু আত্মহত্যা নাকি দুর্ঘটনাজনিত — সেই প্রশ্নের চূড়ান্ত উত্তর মিলবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পর।

এই আকস্মিক দুর্ঘটনায় গোটা গ্রাম শোকস্তব্ধ। আদিত্যের স্কুলের সহপাঠী, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং প্রতিবেশীরা গভীরভাবে মর্মাহত। এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের অকালমৃত্যু যেন গ্রামের প্রতিটি কোণে বিষাদের সুর ছড়িয়ে দিয়েছে।