অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নয়া নিয়ম! মুখের সাথে ছবির মিল থাকলেই খুদে শিশুরা পাবে খাবার

রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি পরিষেবা ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনল রাজ্য সরকার। ১ জুলাই থেকে চালু হয়েছে নতুন ‘ফেস রেকগনিশন সিস্টেম’, যার মাধ্যমে এবার থেকে খুদে শিশুরা মুখের ছবি মিলিয়েই পাবে খাবার। এই নয়া পদ্ধতি শুধুমাত্র স্বচ্ছতা বৃদ্ধিই করবে না, বরং নিশ্চিত করবে যে সঠিক উপভোক্তাদের কাছেই পুষ্টি পৌঁছে যাচ্ছে।


 

ডিজিটাল হাজিরা, সুনিশ্চিত পুষ্টি

 

নারী, শিশু ও সমাজ কল্যাণ দফতর থেকে জারি করা এক বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এখন থেকে রাজ্যের ১ লক্ষ ১৯ হাজারেরও বেশি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে উপভোক্তাদের মুখের ছবি মিলিয়ে হাজিরা নথিভুক্ত করা হবে। এই ডিজিটাল হাজিরা নিশ্চিত হওয়ার পরেই সংশ্লিষ্ট শিশুকে বা উপভোক্তাকে খাবার দেওয়া হবে। এতদিন পর্যন্ত মোবাইল নম্বর ও আধার নম্বরের ভিত্তিতে পরিষেবা দেওয়া হলেও, এবার এই নতুন ফেস রেকগনিশন সিস্টেমের মাধ্যমে আরও নির্ভুল এবং সুরক্ষিত পরিষেবা প্রদান সম্ভব হবে।


 

‘পোষণ অ্যাপে’ ৫০ লক্ষ উপভোক্তার তথ্য আপলোড

 

এই ব্যাপক পরিবর্তনের অংশ হিসেবে রাজ্যের প্রায় ৫০ লক্ষেরও বেশি অঙ্গনওয়াড়ি উপভোক্তার যাবতীয় তথ্য ‘পোষণ অ্যাপে’ আপলোড করা হবে। এই অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিটি উপভোক্তার ছবি সহ বিস্তারিত তথ্য কেন্দ্রীয় পোর্টালে সংরক্ষিত থাকবে। এর ফলে, কোন উপভোক্তা কতদিন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এসেছেন বা আসছেন, সেই তথ্য অনলাইনে যাচাই করা যাবে।


 

কারা হবেন এই নিয়মের আওতাধীন?

 

নয়া ফেস রেকগনিশন সিস্টেমে সদ্য মা হওয়া মহিলা, অন্তঃসত্ত্বা মহিলা, ছয় মাস বয়সী বাচ্চা থেকে শুরু করে ছয় বছর বয়সী শিশুদের তথ্য ‘পোষণ অ্যাপে’ আপলোড করা যাবে। এটি সুনিশ্চিত করবে যে, যারা প্রকৃত উপভোক্তা, তারাই এই সরকারি সুবিধা পাচ্ছেন।


 

পর্যবেক্ষণ ও স্বচ্ছতার লক্ষ্য

 

সরকারি সূত্রে খবর, এই নতুন নিয়ম চালুর প্রধান উদ্দেশ্য হলো খাবার সরবরাহে নিবিড় নজরদারি চালানো এবং স্বচ্ছতা আনা। এতদিন পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশুরা উপস্থিত না থাকলেও তাদের বাড়ির লোক খাবার নিয়ে যেত, যার ফলে প্রকৃত উপস্থিতি এবং খাবারের অপচয় নিয়ে প্রশ্ন উঠত। এবার প্রতিটি উপভোক্তার মুখের ছবি যাচাই করে খাবার দেওয়ার এই নিয়ম সেই ফাঁকফোঁকর বন্ধ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যে, কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে শুধুমাত্র শিশুদের মায়েদের ছবি আপলোড করার কাজ শুরু হয়েছে। সমাজ কল্যাণ দফতর আত্মবিশ্বাসী যে, এই ডিজিটাল বিপ্লব অঙ্গনওয়াড়ি পরিষেবা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী এবং কার্যকরী করে তুলবে, যা অপুষ্টি দূরীকরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।