বীরভূমে তৃণমূল সভানেত্রীর শ্লীলতাহানি! কাঠগড়ায় ফের শাসকদল, গ্রেফতার ২ কর্মী

বীরভূমের সিউড়ি ২ নং ব্লকে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সভানেত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে দলেরই দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এবং অভিযুক্ত দুই তৃণমূল কর্মীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। নির্যাতিতা নেত্রী আদালতেই গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন, যা এই মামলার গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে।


 

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার? নেত্রীর অভিযোগ

 

সূত্রের খবর অনুযায়ী, গত রবিবার নির্যাতিতা সভানেত্রী কিছু দলীয় কাজের সূত্রে এক নেতার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় সেখানে দলেরই অপর এক বিরোধী গোষ্ঠীর কয়েকজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। নির্যাতিতা নেত্রী অভিযোগ করেছেন যে, ওই কর্মীরা তাঁর চরিত্র নিয়ে অত্যন্ত নিম্নরুচির মন্তব্য করেন। তিনি এর প্রতিবাদ জানালে পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

তৃণমূল নেত্রী তাঁর অভিযোগে আরও জানান, কাজ সেরে ফিরে আসার সময় অভিযুক্তরা তাঁর পথ আটকে হেনস্থা করে। শুধু তাই নয়, তাঁর ওড়না ধরে টানাটানি করা হয় এবং শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয় বলেও তিনি দাবি করেছেন। ঘটনার ভয়াবহতা বোঝাতে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “আমার সঙ্গে যদি দিনের আলোয় এমন ঘটনা ঘটে, তাহলে সাধারণ মহিলাদের সুরক্ষা কোথায়?”


 

অভিযুক্তদের অস্বীকার ও রাজনৈতিক চাপানউতোর

 

এই ঘটনার পর নির্যাতিতা নেত্রী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন, যার ভিত্তিতে অভিযুক্ত দুই তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে, অভিযুক্তরা তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

এই ঘটনা রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে, শাসক দলের অন্দরেই এমন একটি গুরুতর অভিযোগ ওঠায় বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে।


 

বিজেপির কটাক্ষ ও তৃণমূলের নীরবতা

 

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এখন নিজের দলের মহিলারাও রেহাই পাচ্ছেন না।” তাঁর কথায়, এভাবেই তৃণমূল ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে।

যদিও এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করা হয়নি, তবে জেলা স্তরে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে এই ঘটনার পেছনে একটি বড় কারণ, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। এই ঘটনা নিঃসন্দেহে তৃণমূলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে এবং দলের অভ্যন্তরীণ সংঘাতকে আরও প্রকট করে তুলেছে। পুরো বিষয়টি এখন পুলিশের তদন্ত এবং আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল।