কালীগঞ্জ কাণ্ডের উত্তাপ তুঙ্গে, মীনাক্ষীর ‘কুরুচিকর’ মন্তব্যের পাল্টা কুণাল ঘোষ, প্রকাশ্যেই নিজের বংশ পরিচয় তুলে ধরে বামেদের আক্রমণ

নদিয়ার কালীগঞ্জ উপনির্বাচনকে ঘিরে রাজ্যের রাজনৈতিক উত্তাপ এখন চরমে। তৃণমূলের বিজয় মিছিল থেকে ছোড়া সকেট বোমায় ৯ বছরের শিশু তামান্নার মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোর। সিপিএম-কে ভোট দেওয়ার ‘শাস্তি’ হিসেবেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তুলেছে বামেরা। এই ঘটনার প্রতিবাদে এক জনসভায় সিপিএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জি তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে ‘কুরুচিকর’ ভাষায় আক্রমণ করলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে।
মীনাক্ষীর ‘কুরুচিকর’ মন্তব্যের জবাব: কুণালের ‘বংশ পরিচয়’
মীনাক্ষী মুখার্জীর কুরুচিকর মন্তব্যের প্রত্যুত্তরে কুণাল ঘোষ আজ তাঁর বংশ পরিচয় তুলে ধরে পাল্টা জবাব দিয়েছেন। তিনি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে হেসে বলেন, “মীনাক্ষী আমার চেয়ে অনেক ছোট। তবুও ও আমার সম্বন্ধে এই ধরণের কুরুচিকর ভাষা প্রয়োগ করেছে। এর থেকে প্রমাণিত যে আমি তৃণমূল মুখপাত্র হিসেবে কতটা সফল।”
এরপর কুণাল ঘোষ মীনাক্ষীর উদ্দেশ্যে বলেন যে, এই ধরনের উক্তি করার আগে তার জানা উচিত কুণাল ঘোষের বংশ পরিচয়। তৃণমূল মুখপাত্র জানান, তাঁর বাবা শ্রী কল্যাণ ঘোষ ছিলেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র এবং তাঁর মাও একই কলেজের ছাত্রী ছিলেন। এমনকি, তৎকালীন সময়ের তাবড় সিপিএম নেতা যেমন অনিল বিশ্বাস, অসীম দাসগুপ্তেরও চিকিৎসা করেছেন কল্যাণ বাবু, এমনটাও উল্লেখ করেন কুণাল।
কুণাল ঘোষ তার ভিডিও বার্তায় স্পষ্ট করে বলেছেন, মীনাক্ষীর যদি ক্ষমতা থাকে তবে এক টেবিলে তাঁর সঙ্গে বসুক। তিনি আরও বলেছেন, “সুশান্তের প্রশিক্ষণে সিপিআইএমে অনেকে অনেক ভাষা শেখে, মীনাক্ষীও তাদের সঙ্গে একই ক্লাসের ছাত্রী।” এই মন্তব্য বামেদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকেই কটাক্ষ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সারদা কাণ্ড ও বামেদের বিরুদ্ধে চিটফান্ডের অভিযোগ
সারদা কাণ্ড নিয়ে তাকে এখনও আক্রমণ করা হয় উল্লেখ করে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ স্বীকার করেন যে, তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে তিনি জোর দিয়ে দাবি করেন। একই সঙ্গে তিনি রোজ ভ্যালির দুর্নীতির প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন।
কুণাল ঘোষ আরও যোগ করেন, “সিপিআইএমের ৩৪ বছরের রাজত্বে শুধু মা বোনেদের সম্মান হানি হয়েছে।” এমনকি, চিট ফান্ড দুর্নীতির বেশিরভাগ টাকা বামপন্থী পত্রিকা ‘গণশক্তি’ ঘরে তুলেছে বলেও মন্তব্য করেন কুণাল ঘোষ।
রাজনৈতিক বিরোধিতা থাকবে এবং উত্তর প্রত্যুত্তর চলবে, কিন্তু কোনো প্রকাশ্য জনসভায় এই ধরণের কুরুচিকর ভাষা রাজনীতিকে শুধু কলুষিতই করবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কালীগঞ্জ কাণ্ড এবং তার পরবর্তী রাজনৈতিক বাগযুদ্ধ রাজ্যের সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশকে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।