“ইসরায়েল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যেতো”-যুদ্ধে কেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশ করেছিল, জানালেন খামেনি

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইসরায়েল ‘প্রায় খাদের কিনারায়’ পৌঁছে গিয়েছিল বলে বিস্ফোরক দাবি করলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি এই সংঘাতে প্রবেশ না করত, তাহলে ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনী ইসরায়েলকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলত। খামেনির এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
“আরও কিছুদিন চললে ইসরায়েল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যেতো”:
আয়াতুল্লাহ খামেনি তাঁর ভাষণে বলেন, “ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনী ইসরায়েলকে খাদের কিনারায় নিয়ে গিয়েছিল। যদি আরও কিছুদিন এই সংঘাত চলত— তাহলে ইসরায়েল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যেতো।” তিনি দাবি করেন, এই পরিস্থিতি বুঝতে পেরেই যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতে প্রবেশ করে, কিন্তু তাদের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও ইরানই জয়ী হয়েছে।
খামেনি বলেন, “এই সংঘাত থেকে যুক্তরাষ্ট্র কিছুই অর্জন করতে পারেনি। উপরন্তু ইসলামিক রিপাবলিক গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) বিজয়ী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের মুখে শক্ত চপোটাঘাত করেছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “সেই সঙ্গে এত সব হৈচৈ-হট্টগোলের মধ্যে জায়নবাদী শাসকগোষ্ঠী ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের আঘাতে একই সঙ্গে উৎখাত ও চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়েছে।”
সংঘর্ষের সূত্রপাত এবং মার্কিন হস্তক্ষেপ:
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ‘ইরান পরমাণু বোমা তৈরির দোরগোড়ায়’ – এই অভিযোগ তুলে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী তেহরান ও অন্যান্য এলাকায় বিমান অভিযান শুরু করে। এর জবাবে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে শুরু করে ইরানও।
১০ দিনের তীব্র সংঘাতের পর ২২ জুন মধ্যরাতে মার্কিন বিমান বাহিনী ‘দ্য মিডনাইট হ্যামার’ নামে এক অভিযানে ইসরায়েলের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায়। এই মার্কিন হস্তক্ষেপের একদিন পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান-ইসরায়েলে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন। ট্রাম্পের এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বিবৃতি দিয়ে যুদ্ধবিরতি মেনে নেওয়ার কথা জানান। তিনি বলেন, ইরান যুদ্ধবিরতি মেনে চলবে এবং ইসরায়েল পুনরায় হামলা না করলে তেহরান আর সংঘাতে যাবে না।
খামেনির এই দাবিগুলি মধ্যপ্রাচ্যের চলমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। ইরানের এই দাবি কতটা বাস্তবসম্মত এবং এর পেছনে কী ধরনের রাজনৈতিক বার্তা রয়েছে, তা নিয়েও আলোচনা চলছে।